রোকসানা ইয়াসমিন রেশনা: যে নারীর মুভমেন্ট যতো বেশি, তার বিভিন্ন ক্ষেত্রে হয়রানির পরিমাণও যেন ততো বেশি। কর্মজীবী নারীদের বেলায় তো কথায় নেই। ঘরে বাইরে সব জায়গায় কতো প্রকার হয়রানি যে সামাল দিতে হয়, তার হিসাব নেই। এর মাঝে সব থেকে যন্ত্রণাদায়ক যেটা, সেটা হচ্ছে যৌন হয়রানি। তা হতে পারে বস, সহকর্মী, এমন কী জুনিয়র সহকর্মীর মাধ্যমেও।
এটা যে সব সময় অনেক বড় কিছু হয়, তা না। বস আপনার দিকে তাকিয়ে টুক করে চোখ মেরে দিল, সহকর্মীর সাথে পাশাপাশি বসে মিটিং করছেন, দেখা যাচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে সে আপনার গায়ে হাত দিয়ে বা কনুই দিয়ে স্পর্শ করছে; এমনকি একজন পিয়ন চা দিতে এসে চা এর কাপটা টেবিলে না রেখে, ডিরেক্ট আপনার হাতে দিতে গিয়ে হাতটা স্পর্শ করে গেলো।
এইগুলো একবার দুইবার হয়তো মনে করা যায়, ভুল করে হয়ে গেছে। কিন্তু বার বার যখন ঘটতে থাকে এবং একজন নারী যখন বুঝতে পারে আসল রহস্য, তখন যে তার মনের কী অবস্থা হয় তা বলে বোঝানো যাবে না। অনেক সময়ই সাহসের অভাবে বা মান সম্মানের ভয়ে বা চাকরির ক্ষতি হবে ভেবে কষ্ট হলেও সহ্য করে যায়। একদম অসহ্য পর্যায়ে গেলে অনেকে চাকরি ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়।
কিন্তু নারী, তুমি কেন অন্যায় সহ্য করবে বা চাকরি ছাড়বে? চাকরি যদি ছাড়তেই হয়, তবে ছাড়বে ঐসব কুলাঙ্গারেরা। অন্যায়ের শাস্তি পাবে ঐসব লোফাররা। এর জন্য শুধু প্রয়োজন নিজের উপর একটু আত্মবিশ্বাস, একটু সাহস, আর একটুখানি টেকনিক। ও হো। একটা বাদ পড়ে গেলো। সাথে লাগবে একটুখানি অভিনয়।
জানেন তো,, যারা অন্যায় করে, তাদের মন সবসময় দুর্বল থাকে। তাই প্রথম যে কাজটা করতে হবে তা হচ্ছে, যদি বস তোমাকে চোখ মারে, তৎক্ষণাৎ তুমি তার কাছে হাসিমুখে একটু এগিয়ে যাও। হাসিমুখেই কানে কানে বলুন, এরপর যদি এইরকম করেছেন না, তাহলে আস্তে করে চোখটা উপড়ে ফেলবো। কেউ গায়ে হাত দিলে তাকেও ভদ্র কিন্তু দৃঢ়ভাবে বলুন, আপনার স্পর্শটা আমার মন্দ লাগে না। তবে যেদিন খারাপ লাগবে, সেদিন কিন্তু হাতের জায়গায় হাত থাকবে না।
আর জুনিয়র কলিগ হলে, কানের নিচে ঠাস করে একটা লাগিয়ে দিন। ঠিক ড্রামাটিক স্টাইলে এই কাজগুলো করার সময় কোন সাক্ষী রাখা যাবে না কিন্তু। তারপর দেখুন, কুলাঙ্গারেরা কেমন লেজ গুটিয়ে পালায়।
তুমি নারী। তুমি সব সময় মনে মনে নিজেকে বলো, আমি সৎ, আমি আত্মবিশ্বাসী। আমার উপর কোন যৌন হয়রানি হলে তার প্রতিবাদ আমি নিজেই করতে পারি।