ফারিয়া ফেরদৌস: বিয়ে আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় বলেই আমাদের বিশ্বাস। কিন্তু কখনো কখনো এই বিয়ে নিয়ে আমরা জীবনের সবচেয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতার শিকার হই। অতীতে এই বিয়ে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হতো, আর সমস্যা নিরসনে এখন আমাদের দেশে বিয়ে রেজিস্ট্রি বাধ্যতামূলক।
বিয়ে রেজিস্ট্রির কাজটি সম্পন্ন করার জন্য একটি “ফর্ম” তৈরি করা হয়েছে যেখানে দুই পক্ষেরই বিভিন্ন ধরনের তথ্য লিপিবদ্ধ করা হয়। এই “ফর্ম” টিকে আমরা কাবিননামা বা নিকাহনামা বলে থাকি।
বিয়ের কাবিননামার ৫ নাম্বার কলামে লিখা থাকে, “কন্যা কুমারি/ বিধবা /তালাকপ্রাপ্তা নারী কিনা?” যদি কোন মেয়ে “বিধবা/তালাকপ্রাপ্তা” হওয়ার পর ও ওই ঘরে লিখে “কুমারি” আর তা প্রমান করা যায় তবে তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া যায়। অনেক সময়ই অনেক মেয়েপক্ষ এই কাবিন নামায় মিথ্যা তথ্য দিয়ে থাকে, আর অনেকে ছেলেকেই দেখেছি এই গ্রাউন্ডে বউ চিট করেছে বলে মামলা না করলেও তালাক দিতে বিন্দুমাত্র বিলম্ব করেনি। আর মেয়ে পক্ষ নিজ ভুলের কারণে চুপ করে থাকে!
এখন ঘটনা হলো যে, কাবিননামার ২১ ও ২২ নাম্বার কলাম যথাক্রমে, “বরের কোন স্ত্রী বর্তমান আছে কিনা এবং থাকিলে অন্য বিবাহে আবদ্ধ হইবার জন্য বর ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ মোতাবেক সালিসী কাউন্সিলের অনুমতি লইয়াছে কিনা?” এবং “ অন্য বিবাহে আবদ্ধ হইবার জন্য সালিসী কাউন্সিলের নিকট প্রেরিত অনুমতি পত্রের নম্বর ও তারিখ ।“
“বর কুমার/ বিপত্নীক /তালাকপ্রাপ্তা পুরুষ কিনা?” —এই কথাটি কোথাও লিখা নাই। দেখা গেছে অনেক মেয়েই এসে বলে, আমার বর যে আগে বিয়ে করেছিল এটি আমি জানতাম না।
এখন এই যে “আমি জানতাম না যে সে আগে বিয়ে করেছিল” এটা প্রমাণ করা আর তৈলাক্ত বাঁশে বানরের অঙ্ক করা অনেকটা কাছাকাছি জিনিস!!!! বিয়ের সময় কাবিননামার কোথাও এই বিষয়টি লিখিত না থাকার কারণে মেয়েদের জন্য প্রমাণ করা কষ্ট হয়ে যায় যে, বিয়ের সময় ছেলে মিথ্যা তথ্য দিয়েছে। কাবিননামায় এই সংক্রান্ত তথ্য দেয়া থাকলে মেয়েটির জন্য সুবিধা হয় বিষয়টি নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নিতে।
অ্যাডভোকেট, সুপ্রিম কোর্ট
বি. দ্র. (যেকোনো ধরনের আইনী সহায়তার জন্য উইমেন চ্যাপ্টারের পক্ষ থেকে ফারিয়া ফেরদৌস এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের নাহিদ শামস্ আপনাদের পাশে আছেন)।