জাহানারা ইমাম সম্পর্কে পাপিয়া’র এ কোন বক্তব্য!

উইমেন চ্যাপ্টার (৩০ জুন): শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে ‘পাকিস্তানের অনুগত কর্মচারি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য সৈয়দা আশিফা আশরাফী পাপিয়া। এই কটূক্তির জের ধরে তার মাইক বন্ধ করে দেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। জাতীয় সংসদে বাজেটের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনার সময় এ ঘটনা ঘটে।
আইন ও বিচার বিভাগের মঞ্জুরি দাবির ওপর ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপনের সময় পাপিয়া বলেন, ‘পাকিস্তানের অনুগত কর্মচারি জাহানারা ইমামকে দিয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তিনি আয়না অনুষ্ঠানের উপস্থাপিকা ছিলেন’।
এ সময় সরকারি দলের সংসদ সদস্য এর তীব্র প্রতিবাদ জানান। সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
স্পিকার শিরীন শারমিন এ সময় পাপিয়ার মাইক বন্ধ করে দেন। পরে পাপিয়া যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে গড়ে ওঠা শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চের সমালোচনা শুরু করলে দ্বিতীয় দফায় তার মাইক বন্ধ করা হয়।
এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “আপনি ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করুন। প্রাসঙ্গিক কথা বলুন।”
নব্বইয়ের দশকে জাহানারা ইমামের নেতৃত্বেই যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। তিনি ছিলেন নির্মূল কমিটির সভাপতি ও সেই সময়ে গঠিত গণআদালতের প্রধান উদ্যোক্তা।
সেই গণ আদালতে জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আযমের ফাঁসির প্রতীকী রায় দেওয়া হয়েছিল।
নির্মূল কমিটির সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ‘শহীদ জননী’ হিসেবে দেশব্যাপী পরিচিত হয়ে ওঠেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ শফি ইমাম রুমির মা জাহানারা ইমাম। তার আত্মজীবনীমূলক লেখা ‘একাত্তরের দিনগুলি’কে মুক্তিযুদ্ধের একটি অসাধারণ দলিল হিসেবে দেখেন ইতিহাসবেত্তারা।
যুদ্ধাপরাধী কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় প্রত্যাখ্যান করে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চের যে আন্দোলন শুরু হয়, সেখানেও জাহানারা ইমামের আন্দোলন প্রেরণা জুগিয়েছে বলে এ প্রজন্মের তরুণেরা বলেছেন। শুধু তাই নয়, এ প্রজন্ম জাহানারা ইমামকেই তাদের আন্দোলনের অগ্রগামী নেত্রী হিসেবে দেখছেন।

শেয়ার করুন: