তামান্না স্বর্ণা: নারী জীবনের কিছু কথা আছে যা কাউকে বলা যায় না। হোক না তার বয়স ৪, ১৪, ২৪, ৩৪ বা ৪৪, কোনো এক অজানা কারণে সে পুরুষের শৌখিনতার বস্তু। চার বছরের বাচ্চাটা যে জানে না শরীর কী জিনিস, সেও তার বুকে-ঠোঁটে-গালে একটা অন্যরকম হাত আর মুখের উপস্থিতি টের পায়। সেও হয়তো বুঝতে পারে, এই স্পর্শ আদরের নয়। কিন্তু স্পর্শটা কী, সেটাই বুঝতে পারে না। তার আগেই ঘটে যায় অনেক কিছু।
জানি না বাচ্চাটার পোশাকের সমস্যা ছিল কিনা, থাকতেও পারে। আগে বিশ্বাস করতাম মানুষ শিক্ষিত হলেই বোধ হয় চরিত্রবান হয়। কিন্তু কথাটা যে কতো বড় মিথ্যা আমার নিজের চোখে না দেখলে তা বুঝি এই বিশ্বাসটাই সারা জীবন থাকতো। শিক্ষিত-অশিক্ষিত যেই হোক না কেন তারা পুরুষ। নারী, নারীদেহ তাদের কাছে খাবারের মতো মোহনীয়। তাইতো চলন্ত পথে আস্তে কনুই দিয়ে বুকে গুঁতো দিতে তাদের বাধে না।
যখন ১০-১১ বছরের ফ্রক পড়া একটা মেয়ে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হয় তখন কিছুক্ষণের জন্য সে বিহ্বল হয়ে যায়। রাত জেগে সে কাঁদে কেন তার সাথে এমন হয়, কেন সে মরে না। এ লজ্জা, এ অপমানের কথা কাকে বলবে সে। কাকে বলবে রিক্সাওয়ালাও তাকে দেখে বাজে অঙ্গিভঙ্গি করে।
বাইরের লোকদের এ আচরণের সাথে যোগ হয় নিজ রক্তের মানুষদের আনাগোনা। কম বয়সী (এমনকি মাঝ বয়সিরাও বাদ যায় না) মামা-চাচারা জোর করে চুমু খেতে চায়। মাঝ রাতে টের পায় তার আপন সহোদর পেটে হাত বুলাচ্ছে। সে কী অবাক হবে, না চিৎকার করবে ঠিক বুঝতে পারে না। ১৫ পার হতে না হতেই তার মনে পুরুষদের প্রতি ঘৃণা ছাড়া কিছুই থাকে না।
এ লজ্জা, এ অপমানের কথা কাকে বলবে? বাবা-মাকে? যে দেশে বাবা-মায়েরা ছেলেকে নিজের জীবনের চেয়ে ভালোবাসে, যাকে তারা চোখে হারায়, তার এ আচরণ শোনার পর গলায় ফাঁস দেয়ার ইচ্ছা কি অসম্ভব কিছু?
অতএব সহ্য করা ছাড়া কিছুই করার নেই। সারাজীবন এমন ভান করো যে, কিছুই হয়নি। হাসিমুখে ভাইয়ের সাথে কথা বলতে হয়, তার কথা শুনতে হয় যাই করুক না কেন সে যে বড় ভাই!
মাঝে মাঝে আবার এমন পুরুষ দেখেও সে অবাক হয়, কতো সুযোগ পেয়েও কোন ছুতায় গা ছোঁয় না। এও কী সম্ভব? এমন পুরুষও থাকতে পারে যে নারী কে সম্মান করে? নিজ রক্তের চেয়ে তাকে নিরাপদ মনে হয়। নাকি এও কোনো এক ধরনের সুযোগের অপেক্ষায় আছে ঠিক বিশ্বাস করাটা কঠিন।
নিজের অভিজ্ঞতা বলি মেয়ে হিসেবে আমার জীবনটা খুব বেশি সুখের ছিল না। বিভিন্ন বয়সে বিভিন্ন রকমের হয়রানির সম্মুখীন হয়েছি। চার বা পাঁচ বছর বয়সে আমি এই ঘটনার মুখোমুখি হই। ছোটবেলার অনেক কথা ভুলে গেলেও এই ঘটনা আমাকে হরর মুভির মত তাড়া করে এখনও।
আমি জানি যারা এই লেখাটা পড়বেন আপনারা সবাই কম বেশি এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়েছেন। আপনাদের মেয়ে, বোন, আত্মীয়-স্বজন সবার সাথে শেয়ার করুন, তাদেরকে এই ধরনের বাজে অভিজ্ঞতার সামনে পড়তে দিবেন না। কারণ জীবনে অনেক কিছু ভুলে গেলেও এই অভিজ্ঞতা কেউ ভুলবে না। trust me. আর এই ধারণাটা ভুল যে যৌন হয়রানির শিকার শুধু মেয়েরা হয়। ছেলেরাও যে নিরাপদ নয় একটু খবরের কাগজ ঘাঁটলেই দেখবেন। কাজেই তাকেও ছোটবেলা থেকে নজরে রাখা, বা তাকেও এ ব্যাপারে সতর্ক করে দেয়া প্রতিটা অভিভাবকেরই দায়িত্ব।
women chapter-e kibhabe lekha patabo?
women chapter website er niche dekhu e-mail ID deya achhe, ote pathhiye din…
This “free sharing” of iniarmotfon seems too good to be true. Like communism.