নেলসন ম্যান্ডেলার পরিবার হাসপাতালে

Nelson Mandelaউইমেন চ্যাপ্টার (২৭ জুন): দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নেতা নেলসন ম্যান্ডেলা (৯৪) ওরফে মাদিবার পরিবারকে জরুরিভাবে প্রিটোরিয়ার হাসপাতালে ডেকে আনা হয়েছে। দেশটির একটি সংবাদ মাধ্যম এই তথ্য জানিয়ে বলেছে,মাদিবার কন্যা মাকাজিবি ম্যান্ডেলাকে স্থানীয় সময় সকাল সোয়া ১০টার দিকে হাসপাতালটিতে ঢুকতে দেখা গেছে। এর আগে, ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্সের মুখপাত্র মুসি মাইমেনকেও ফুল হাতে প্রবেশ করতে দেখা গেছে।

সংবাদ মাধ্যমটি এর আগে জানায় যে, লাইফ সাপোর্ট দিয়ে রাখা হয়েছে মাদিবাকে এবং যেকোনো সময় তা সরিয়ে নেয়া হতে পারে। বিশ্বজুড়ে প্রার্থনা চলছে তার জন্য। প্রিটোরিয়ার সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে মাদিবার মরদেহ বহনের জন্য। কবরও প্রস্তুত। দেশটির প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বুধবার রাতে ম্যান্ডেলাকে দেখে আসার পর তার মোজাম্বিক সফর বাতিল করেছেন।

বিশ্বজুড়ে নেতৃবৃন্দ ম্যান্ডেলার জন্য প্রার্থনা অব্যাহত রেখেছেন। হিলারি ক্লিনটন টুইট বার্তায় বলেছেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় বন্ধু মাদিবা, তার পরিবার এবং কঠিন সময়ে তার দেশ ও গোটা জাতির জন্য ভালবাসা এবং প্রার্থনা’। জাতিসংঘ মহাসচিক বান কি মুন বলেছেন, সারাবিশ্ব আজ মাদিবার জন্য প্রার্থনারত।

পূর্ব প্রিটোরিয়ার মেডি ক্লিনিক হার্ট নামের যে হাসপাতালটিতে মাদিবা আজ ২০তম দিন ধরে চিকিৎসাধীন আছেন, তার সামনে বুধবার রাতে মোম জ্বালান তার ভক্তরা। মাদিবার জন্য রঙ-বেরঙের বেলুন, ফুল, ছবি আর চিত্রকলা, পাশাপাশি তার সুস্থতা কামনা করে অসংখ্য কার্ড, পতাকা, ব্যানারে ছেয়ে গেছে পুরো হাসপাতালের প্রবেশপথ। ভোর ৩টার দিকে অধিকাংশ সাংবাদিকই হাসপাতাল ছেড়ে গেলেও কিছু রয়ে গেছেন। সরাসরি সম্প্রচার করছে বিদেশি নিউজ চ্যানেলগুলো। মধ্যরাতেও হাসপাতালের আশপাশ ভরা ছিল টিভি ক্যামেরা, ক্রু।

মাদিবার পরিবার থেকে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখার খবর প্রকাশের সাথে সাথে বিশ্বজুড়ে নেমে এসেছে স্তব্ধতা। বান কি মুন নিউইয়র্কে অর্গানাইজেশন অব আফ্রিকান ইউনিটির ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে মাদিবাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম ‘জায়েন্ট’ বলে অভিহিত করেছিলেন। এই সংগঠনটিই আফ্রিকায় বর্ণবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছিল।

বান কি মুন এক বার্তায় মাদিবার পরিবারের প্রতি সান্ত্বনা জানিয়ে বলেন, ‘আজ আমাদের আফ্রিকার প্রতিটি মানুষের জীবনের মানোন্নয়ন এবং সুবিধা নিশ্চিত করতে একই পরিমাণ আস্থা বজায় রাখতে হবে এবং কাজের উদ্দেশ্য ঠিক করতে হবে’।

এদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকার কুনু গ্রামও প্রস্তুত মাদিবার মরদেহ গ্রহণের জন্য। গ্রামটির প্রধান বালিজুলু বলেছেন, ম্যান্ডেলার পরিবার চেয়েছিলেন যে, তাদের প্রিয় মানুষটি মরদেহ সেখানেই শুইয়ে দেয়া হবে, যে জায়গাটির সাথে তাদের জন্মের সম্পর্ক। তিনি সেটি তার পরিবারকে আশ্বস্ত করেছেন জানিয়ে বলেন, মাদিবা খুবই কাছের মানুষ ছিলেন কুনু গ্রামের। তিনি চাইতেন যে, তার সন্তানদেরও তারই সাথে কবর দেয়া হোক। এমনকি ম্যান্ডেলার তিন সন্তানের দেহাবশেষও অন্য জায়গা থেকে উঠিয়ে এনে মাদিবার পাশেই শেষ শয্যায় শোয়ানো হবে বলেও তিনি জানান মাদিবার মা এবং বাবার কবরও আছে সেখানে।

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.