হিজাব আমাদের সংস্কৃতি ছিল না কখনই

71
একাত্তরে বাংলার নারী

ফারহানা আনন্দময়ী: ১৯৭১ সালে যাঁরা সময়কে মনে রাখার বয়সে ছিলেন, তাঁরা একটু মনে ক’রে বলুন তো তখন কি কোনো একজন বাংলাদেশি নারীকেও হিজাব পরিহিত দেখেছেন কিনা। আমি বই-ম্যাগাজিনের ছবিতে সেই সময়ের নারীদেরকে যেমন দেখেছি, মনে পড়ে না একজন কাউকেও হিজাবে দেখেছি।

১৯৭১ গেল… ১৯৮১, ১৯৯১, ২০০১, ২০১১… এরকমই চলছিল।

এই চল্লিশ বছরে বাঙালি নারী তথা আমাদের নানী-দাদি, মা-চাচী, খালা-ফুফু মোটামুটি পরিচিত এবং আশেপাশের সকলকেই শাড়িতে এবং কারো কারোকে শাড়ির আঁচল তুলে মাথায় দিতে দেখেছি। কেউ কেউ সেলোয়ার-কামিজ পরতেন। আমাদের চোখ সেভাবেই অভ্যস্ত হয়েছে। এগুলোই ছিল আমাদের চোখে বাঙালি নারীর মার্জিত পোশাক। হাতে গোণা কিছু নারীকে দেখেছি বোরকা পরতে। সামাজিক অনুষ্ঠানে, অফিসে, রাস্তায়, মার্কেটে তাঁদেরকে আলাদাভাবে চোখে পড়তো, সংখ্যায় গৌণ।

আর আজ ঠিক সেইসমস্ত জায়গাগুলোতে হিজাবের ভীড়ে আমরা সাধারণ পোশাকের নারীরা আলাদাভাবে গণনার মধ্যে পড়ি… নিজেকে এলিয়েন মনে হয়।

গতকাল দেশের একটি জাতীয় দৈনিকে পড়লাম, ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে “হিজাবিস্তা-ফ্যাশানিস্তা” নামে একটি নারী সংগঠন এক প্রীতি-সম্মিলন করেছে। যেখানে বিভিন্ন পেশার এবং নেশার নারীরা একত্রিত হয়ে নিজেদের ভাবনা ভাগাভাগি করেছেন। ভাবনার বিষয়টিও রিপোর্টে উল্লেখ আছে… ফ্যাশন, শপিং, মেইক-আপ রিভিউজ, হিজাব টিউটরিয়াল, কুকিং। এছাড়া তারা মাঝে মাঝে সামাজিক সেবাও করেন যেমন সমাজের কম-সুবিধাপ্রাপ্তদের জন্যে ফান্ড তোলেন।

একটি বিজাতীয় পোশাক যখন হালফ্যাশনের অপরিহার্য অঙ্গ হয়ে ওঠে তখন তা নিয়ে বিরুদ্ধাচারণ করাটা বোকামি। কিন্তু সেই ফ্যাশন যখন আমাদের বাঙালি সংস্কৃতিকে উলটো স্রোতে বইয়ে দেয়ার উপক্রম করে তখন সেটা রুখে দেয়ার প্রয়োজন হয় বৈকি, কথা তখন বলতেই হয়।

আমার যতদূর ধারণা, এই হিজাবের সঙ্গে ধর্মীয় আচার-পালনের যোগসূত্র খুব কম। ধর্মীয় নির্দেশনা মেনে তারা যদি পর্দা করতো তবে আপাদমস্তক কালো বোরকায় ঢেকে শুধু চোখ দুটো প্রকাশ্য রাখতো। কিন্তু আমরা দেখি এক অদ্ভুতুরে মাথা-প্যাঁচানো পোশাক। গ্রামে যারা হিজাব পরছেন তারা পাশেরজনেরটা দেখে হুজুগে পরছেন। কেউ স্বামীর ধমকে পরছেন, কেউ ওয়াজ-ফতোয়ার ভয়ে পরছেন।

Hijab 1আর শহরে যারা পরছেন, তাদের ৯০% ভাগই ফ্যাশনের জন্যে পরছেন। পোশাকের সঙ্গে রঙ মিলিয়ে ২৫-৩০টা হিজাব আলমারিতে সাজাচ্ছেন। কিছুদিন আগেও শুনেছি কেউ কেউ অনুষ্ঠানে যাওয়ার আগে বিউটি পার্লারে গিয়ে শাড়ি পরতেন। এখন নারীরা দেখছি পার্লারে যায় হিজাব সুন্দর ক’রে পরার জন্যে। মাথার হিজাবের ভাঁজ যত বেশি, তত বেশি সৌন্দর্য(!)। চুল-সেট করার খরচ এখন হিজাব-সেটিং’এ খরচ হচ্ছে।

সবচেয়ে ভয়ংকর তথ্য হচ্ছে, শুধু মধ্যবয়সী নারীরা নয়, বাঙালি কিশোরী-তরুণীরা হিজাব-স্রোতে ভেসে চলেছে। হাতের মোবাইল সেটের মতো মাথার হিজাবের প্রকরণও তাদের স্ট্যাটাস-সিম্বল হয়ে উঠছে, কার হিজাবে কত বেশি এবং কত দামি পাথর লাগানো আছে! এখনও চোখে পড়েনি, তবে আমি নিশ্চিত, দু’দিন পরে ডায়মন্ডের হিজাব-পিন তাদের মাথায় দেখতে পাবো।

ইংরেজি মাধ্যমে পড়ছে এবং পোশাকে স্মার্ট এমন ক’জন কিশোরীকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, কেন এই হিজাব পড়ছো? দেখে তো মনে হয় না, তোমরা খুব রক্ষণশীল পরিবারের মেয়ে। তাদের উত্তরটা মোটামুটি এরকম, “ না না, ওরকম কিছু নয়, I just want a changed look.”

এরপরে আর কী বলার থাকে, বলুন। আমি স্বীকার করি, হিজাব পরাটা যে কারোর ব্যক্তিগত পছন্দ। কিন্তু পাঁচ বছর আগেও তো বাঙালি নারীর পছন্দের পোশাকের তালিকায় এই বিজাতীয় হিজাব ছিল না। আজ কেন এলো, কোথা থেকে এসে চেপে বসলো বাঙালি সংস্কৃতির ঘাড়ের ওপরে ? কবে থেকে বাঙালি নারীর সব লজ্জা মাথার চুলে গিয়ে ঠেকলো ? এটা সত্যিই ভাববার বিষয়।

বিষয়টা যদি এমন হতো যে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু নারীর ব্যক্তিগত পছন্দের পোশাক এই হিজাব তবে এটা ভাববার মতো গুরুত্বপূর্ণ কোনো বিষয়ই নয়। কিন্তু ‘শষ্যের চেয়ে টুপির সংখ্যা বেশি’র মতো যখন চারপাশ ছেয়ে যায় হিজাব-সজ্জায় তখন তা আগামিদিনের এক মৌলবাদী বাংলাদেশের ভয়াবহ চিত্রের ইঙ্গিত দেয়। তারা কি একবারের জন্যেও ভাবছেন, এই হুজুগের স্রোতে নাম লেখাতে গিয়ে কী ভয়ংকর এক বাংলাদেশকে তারা আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন ?

শুধু কি দেশে? না, ছবিতে দেখেছি বিদেশে বাংলাদেশের কিছু দূতাবাসের বিশেষদিনের আয়োজনে আয়োজকপক্ষকে হিজাবে সজ্জিত। তারা এই সাজে বিদেশিদের কাছে ভুল বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছে।

কারণ, হিজাব-সংস্কৃতি আমাদের নয়, কোন বাঙালির নয়, কোন বাংলাদেশির নয়… কখনোই নয়, কোনোদিন ছিল-ও না।

 

শেয়ার করুন:

খুবই চমতকার বিশ্লেষণ করেছেন। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় অনেকেই আপনার এ লেখাটি বুঝবেনা। তবে আপনার শেষ লাইনের বেলায় বলতে হয় আমরা সবসময়ই হীনবুদ্ধির মানুষ ছিলাম, তবে অতীতের চেয়ে বর্তমানে বেশি গোড়া, উগ্র আর বিকৃত ধার্মিক হয়ে গেছি। আগে নিজেরা এতটা উগ্র মুসলিম ছিলামনা যতটা এখন হয়েছি।

ধন্যবাদ মুশফিক আপনার আ্যাপ্রেশসিয়েশনের জন্য। । ফারজানা আনন্দময়ীর লেখার কিছু যুক্তিগত ও তথ্যগত এবং অবজারভেশনগত যে দুর্বলতার কথা বলে উপরের কমেন্টগুলোয় সমালোচনা হয়েছে আমি সেগুলো ধরে clarify করার চেষ্টা করেছি মাত্র।আমি মনে করি না বাঙালি মনীষা হীনবুদ্ধিসম্পন্ন। অনেকে ফারজানার মতগুলোকে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত মনে করে হিজাবকে ব্যক্তিগত রুচি ও পছন্দ বলে বর্ননা করেছেন। কিন্তু আমি বলতে চেয়েছি ব্যক্তিগত পছন্দ আর সামাজিক পছন্দ এক বিষয় নয়। ডিপ স্ট্রাকচার বিশ্লেষন করলে দেখা যায় কমোন চেতনা যাকে সামাজিক পছন্দ বলছি তা কখনও খুশি দিয়ে চালিত হয় না, হয় বুদ্ধিবৃত্তিক সচেতন সমাজ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত থেকে (প্রগতির জন্য) নয়তো সূক্ষ্ম সাংস্কৃতিক হেজিমনি দ্বারা চালিত দাস চেতনা থেকে যার তারা নিজেরা চালক নয়, চালিতের মত গ্রহন করে (কিংবা বুদ্ধির দেউলিয়াত্বে তখন গ্রহন করাটাই অনিবার্য হয়ে ওঠে)। আমি এখানে হিজাবের পক্ষে ও বিপরীতে নারীবাদী মতাদর্শ কম আলোচনা করেছি। কারন সেটি অন্যরা আলোচনা করবেন ও করছেন বলে। আমার লেখার বিষয়বস্তু হিজাবকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে যে এক ধরনের ইসলামোফোবিয়া ও সে থেকে তার সমালোচনা এবং অন্যদিকে হিজাব পরিধানকে ধর্মীয় স্বাধীনতা, ফ্যাশন চয়েস বা পর্দা বলে পক্ষপাতিতা – এ দুই থেকে দূরে একটি ভিন্ন প্রশ্নে। বাঙালিয়ানার আবহ মিশিয়ে উদ্ভাবন করে নিয়ে ফ্যাশন কিংবা পর্দা কি হতেই পারে না? এটা এদের ধর্ম; তবে এটা এদের সংস্কৃতি – এটাও যেন জীবিত থাকে। বেদ-মহাভারতের উদাহরণ দিয়েও পর্দা বা অবরোধের নমুনা যে এ অঞ্চলে প্রচীন এবং ধর্মীয় কিংবা সংস্কৃতি রূপে চর্চিতই ছিল অনেকেই সেটা উল্লেখ করে থাকেন। তাহলে কোরানের নির্দেশনা মোতাবেক পর্দা মানতে দোষের কোথায়? তাই সেটা পালনীয় হলেই মৌলবাদ নয় এটি তাঁরা বলে থাকেন। সত্যিই সেটা মৌলবাদ নয় যতক্ষণ সেটা ধর্ম, কিন্তু মৌলবাদ হয়ে যাবে যখন সেটি রাজনীতি। অর্থাৎ মৌলবাদের সাথে ধর্ম কম, রাজনীতির সম্পর্ক বেশি। আর এই রাজনীতি সাম্রাজ্যবাদী অর্থনৈতিক হতে শুরু করে হেজিমনিক একমাত্রিক সংস্কৃতি কায়েমের হতে পারে। কোরানের নির্দেশনা পর্দানশীল হতে বলা থাকলেও তাতে তো একটিই বিশেষ পোশাকের ডিজাইন এঁকে দেয়া নেই যেটি অন্য একটি জাতির সাংস্কৃতিক রুচিকে রিপ্রেজেন্ট করে, ফলে সেটা যতটা না হয়ে ওঠে রেলিজিয়াস, তার চেয়ে তাকে রেসিয়াল বলাই ভালো। ফলে ধর্ম মানলেও তা কেন ফ্যাশনে বা ভূষণে বাঙালী বা বাংলাদেশের বলে স্বতন্ত্র identifiable হবে না (অন্তঃত বহির্বিশ্বের কাছে ভিজ্যুয়াল রিপ্রেজেন্টেশনে)? পর্দা বা ধর্মের নামে শুধু আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের (যদিও ইরানের রেভ্যলুশন এই নব্য হিজাবের উৎস বলা হয়ে থাকে) ফ্যাশন adopt করলে বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের সমগোত্রীয় ও সম-চরিত্রেরই আরেকটি দেশ বলেই বাইরের দেশগুলোতে চিনতে শুরু করবে; অন্যদিকে western পোশাক দিয়ে ভরে গেলেও ইউরোপ-আমেরিকার সাংস্কৃতিক উপনিবেশ ভাবতে পারে (যদিও পক্ষ না নিয়েও উল্লেখ্য, ওয়েস্টার্ন পোশাকে ধর্মের গুণাগুণ ও সতী-অসতী লেবেল আরোপিত হয় না)। কে ফ্যাশন চয়েসে রেভল্যুশনিস্ট সে তার পছন্দের বৈচিত্র্য দেখে বোঝা যায়; ফ্যাশনের একমাত্রিকতা নিশ্চয়ই খুশিমনের ফ্যাশন বিপ্লব নির্দেশ করে না। পোশাক তাই মিছরীর ছুরি হয়ে উঠছে কি না তা দেখতে হবে। এমনিতে মনে হচ্ছে মিষ্টি, সুন্দর, কি আর ক্ষতি করছে? আদতে তা ছুরির ফলা হয়ে বাঙালী রমণীর স্বাভিমান ও জাতীয়তার বোধকে নাশ করে ফেলতে পারে। বাঙালী নারীদের বোধিনীও কি তবে হুমায়ুন আজাদের কবিতার বর্ণিত নষ্টদের অধিকারে চলে যাবে, নাকি সে গিয়েছেই?

পর্দা করেন আর যাই করেন, আপনার দেশ আর সংস্কৃতিকে যেন চেনা যায় সেই রকম পোশাক পড়েন (কিংবা উদ্ভাবন করেন)। অর্থাৎ এটা যে অতীতের কোন অনুকরন করতে হবে আমি সেটা বলছি না, নতুন উদ্ভাবনও (new design) হতে পারে যেটার ভিজ্যুয়াল দেখে যেন চেনা যায় এটা বাংলাদেশ, এটা এদের সংস্কৃতি, এটা এদের ভাষা, এটা এদের ইতিহাস, এটা এদের ট্রেন্ডস, এটা এদের নতুন (স্বতন্ত্র ও মৌলিক এককথায় identifiable) ফ্যাশন সেন্স, এটা এদের ধর্ম (নিশ্চয়ই শুধু ইসলাম নয়, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, বিভিন্ন সম্প্রদায়, মতের যেমন বাউল, পীর, ফকিরী, এছাড়া বিভিন্ন indigenous culture-এর জনগোষ্ঠীও এখানে আছে, কিংবা নব্য উচ্চশিক্ষিত ফিলোসফিকাল বিলিভার যেমন – atheist, communist, post-modernist ইত্যাদি)। এটা এদের সংস্কৃতি, এটা এদের ধর্ম – এটা যেন জীবিত থাকে। কোরানে বা বেদে বা মহাভারতের উদাহরণ দিয়ে পর্দা বা অবরোধের নমুনা যে ধর্মীয় এবং পালনীয় সেটা অনেকে এখানে বলছেন। কিন্তু কোরানে কিন্তু পোশাকের ডিজাইন এঁকে দেয়া নাই। ফলে পর্দা করলেও তা কেন বাঙালী বা বাংলাদেশে স্বতন্ত্র identifiable হবে না (যখন ফটোগ্রাফি কিংবা ফিল্মে কিংবা আন্তর্জাতিক মিডিয়ার রিপোর্টে রিপ্রেজেন্টেড হবে)। পর্দা বা ধর্মের নামে শুধু আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের ফ্যাশন adopt করলে বাংলাদেশটাকে একটুকরো আফগানিস্তান বা পাকিস্তান বলে বাইরের দেশগুলোতে চিনবে যেমনটা western দিয়ে ভরে গেলেও ইউরোপ-আমেরিকার সাংস্কৃতিক উপনিবেশ ভাবতে পারে। তত্ত্বকথা আলোচনা করে গুরুগম্ভীর করতে না চাইলেও বলতে হয়, এখন বিশ্বে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনেই যে কোন দেশকে কলোনীর মতো করে suck করা সম্ভব (কারন একবার বিদেশী হেজিমনিতে অভ্যস্ত ও নির্ভরশীল হয়ে গেলে ওই সংস্কৃতির সকল পন্যের ভোক্তা ওই নব্য সাংস্কৃতিক দেশটাকে করা যাবে)। এই কারনেই এখন যেরকম হিজাব এখানে ছড়িয়ে পড়ছে তা শুধু কাকতালীয় পছন্দ ভাবা ভল হবে, সুনির্দিষ্ট ভাবে ইসলামের নতুন মৌলবাদের (তালেবান, ISIS, আল কায়েদা etc.) সাংস্কৃতিক হেজিমনির adaptation এই ডিজাইনের হিজাবগুলো (ইসলাম পূর্বেও এদেশে ছিল, কিন্তু তখন খুশিমনে কোন পোশাকই viral হয়ে যায় নি। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, একবার পাকিস্তানী শাসনামলে শাড়িকে replace করে সালোয়ার কামিজকে শহুরে মেয়েদের কাছে হেজিমনিক্যালী adopt করা হয়েছিল (ফ্যাশনের নামে বাঙালী নারীর সাংস্কৃতিক স্বতন্ত্রতা বিনষ্ট করার জন্য : এটা করা হত উচ্চ মধ্যবিত্তের পার্টি কিংবা অনূষ্ঠানগুলোতে তৎকালীন পাঞ্জাবী elite পুরুষগণ কর্তৃক বাঙালী শিক্ষিত রমণীদের শাড়ি সেখানে গেলে unfashionable, গ্রাম্য, অনাকর্ষনীয় – এমন হেজিমনি viral করার মাধ্যমে। ফেমিনিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে শাড়িরও patriarchal cause আছে, কিন্তু সেটি বাঙালী বলে সেসময় identifiable ছিল। যে কোন উন্নত দেশই পরবর্তীতে নতুন ফ্যাশন adopt করে নেয়, কিন্তু তাতে তাদের ফ্যাশন জগতে উদ্ভাবনের গৌরব জড়িত থাকে বলে তাতে তাদের জাতির গৌরবই ছড়িয়ে পড়ে. সাংস্কৃতিক দেউলিয়াত্ব নয়।
আর মনে রাখতে হবে বিশেষ যুগে বিশেষ ট্রেন্ড just ব্যক্তিইচ্ছা ভাবাটা একটা সারফেস স্ট্রাকচারের ঘটনা, ডিপ স্ট্রাকচার বিশ্লেষন করলে দেখা যায় কমোন চেতনা কখনও খুশি দিয়ে চালিত হয় না, হয় বুদ্ধিবৃত্তিক সচেতন সমাজ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত (প্রগতির জন্য) নয়তো সূক্ষ্ম সাংস্কৃতিক হেজিমনি দ্বারা চালিত দাস চেতনা যা তারা নিজেরা চালক নয়, চালিত বলে বোকার মত গ্রহন করে (কিংবা বুদ্ধির দেউলিয়াত্তে গ্রহন করতে মজবুর হয়)।
আজকের যুগে অনেক অবস্থার মধ্যে নব্য ইসলামী মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ (তালেবান, আল কায়েদা, ISIS) একটি বিশেষ অবস্থা বটে। আর অধিকাংশ ধার্মিক, শান্তিপ্রিয় ও দয়ালু মুসলমান মাত্রেই জানে এখানে ইসলামের বিভিন্ন ভার্সন ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিশেষ অপব্যাখ্যার দ্বারা ফায়দা তোলা হচ্ছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা ভোগ ও সাম্রাজ্যবাদী অভিলাষে ইসলামের নতুন হেজিমনিকরণ ঘটছে (যদিও ওসব দেশে নিপীড়নের ইতিহাসও এখানে বিবেচ্য হবে)। কিন্তু বাংলা ও বাঙালীর ইতিহাস অনেক স্বতন্ত্র রকমের। বাঙালী মনীষাও যে কোন গোড়ামীকে কোন যুগেই পাত্তা দেয় নি (কি বৌদ্ধ যুগে, কি নতুন হিন্দু যুগে, কি মুঘল-পাঠান যুগে কি বৃটিশ-পাকিস্তানী শাসনামলে। যদিও আমরা শেষদিকে “বৃটিশের ভাগ কর, শাসন কর” নীতির চূড়ান্ত সাফল্যে বাঙলায় দাঙা দেখলাম (যদিও এতে হিন্দু মৌলবাদী ও মুসলিম মৌলবাদীদের বেশ দায় ছিল)। কিন্তু বাংলার স্বতন্ত্রতা হল এই ত্রিমুখী ধারা এখানে সক্রিয় থাকলেও কখনও জনগনের “খুশিতে” মূলধারা হয়ে উঠতে পারে নি, সবসময়ই মৌলবাদী ধারা এখানে অজনপ্রিয় রূপে মুষ্টিমেয়র ধারা ছিল। সবসময় শক্তিশালী ছিল জাতীয়তাবাদী ধারা (কি ঈশা খাঁদের সময়, কি ভাষা আন্দোলান বা কি মুক্তিযুদ্ধ)। তাই ৪৭’র দাঙাবাজের মৌলবাদী যে আংশিক সত্ত্বাটি বাংলায় মৌলভিত্তি পায় সেটি রয়ে যায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কিন্তু সেটি থেকে নব্য জঙিবাদী ইসলামের অপব্যাখ্যাটি এখানে মূলধারা হয়ে উঠে সকল পূর্ব ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে যুদ্ধ, বোমাবাজী ছাড়া আরও তিনটি শর্তে……….এক. অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মত cultural hegemony মূলধারায় adopt করাতে পারলে (শিক্ষা, বিকৃত ইতিহাস বা ভুল তথ্য, জ্ঞান এগুলো বিশ্বাস করাতে পারলে), দুই. মূলধারার যারা গ্রহন করবে তারা সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াত্তে ভুগলে, তিন. যারা শেখাবে (শাসক বা রাষ্ট্র) তারা অসৎ, অদেশপ্রেমিক কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক মূর্খ হলে। যেসব দেশে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে (কি ওয়েস্টার্ন বা কি মধ্যপ্রাচ্যীয়) নিজস্ব সংস্কৃতির বিলোপ ঘটেছে বা নতুন স্বতন্ত্রতায় গড়ে উঠতে পারে নি তাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলি মিলিয়ে নিন। খোদ মধ্যপ্রাচ্যেরই অনেক দেশ এভাবে দেউলিয়া হয়েছে যদিও ইসলাম পৃথিবীর নানা দেশে, নানা ভূমিতে নানা রঙে ধর্মীয় স্ব-মহিমায় বিদ্যমান ছিল, এখনও threatened হলেও কিছুটা আছে। এই নানা রঙ ও এক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ-য় বিশ্বাস এটাই ইসলামের শক্তি ও সৌন্দর্য। এক রঙ এক পোশাক (সমতা অর্থে নয়, সাংস্কৃতিক সতন্ত্রতা অর্থে) করে দাও এটা ইসলাম কখনই বলে না। কারণ ইসলামের বিশ্বাসে আল্লাহই কি সংস্কৃতির এই বৈচিত্র্য, গাত্রবর্ণের বৈচিত্র্য, ভূমির রূপের বৈচিত্র্য ও প্রকৃতির রূপের বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেন নি? তিনি কি তবে তা খারাপ হবে বলে করেছিলেন যে তা না করে সব এক color করে দিতে হবে? আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামের রঙ এক নয়, যা পরবর্তীতে এক রঙ করার চেষ্টা তা কোন কোন বিশেষ জাতি, বিশেষ সম্প্রদায় বা বিশেষ রুচির একমাত্রিকতার আগ্রাসনের ফসল। আর সেটি বলপ্রয়োগ জনিত শাসন-শোষনের একটি আদর্শগত অস্ত্র। কোন আফগান শাসক যদি বাংলাদেশ দখল করে নিত তবে সে মুসলমান হলেই কি তা খুশিতে মেনে নেয়ার মত বিষয় হবে? তাহলে তো মুঘল আধিপত্যও ঈশা খাঁ’রা মেনে নিলে বাঙালীর গর্বে যায় আসতো না। যেকোন আধিপত্যশীল আক্রমণকারীই ধর্মের ধুয়ায় জাতীয়তাবাদী বাধার সম্মুখীন না হলে তো তা তার পোয়া বারো দশা !! বাঙালীর তেমন ঘটের বুদ্ধিতে স্ব-অভিমান না থাকলে এ দেশের লোক বুঝত, অন্য জাতির কাছে পরাধীনতা (তা নিজ ধর্মেরই হোক) কি জিনিস! কি তার যন্ত্রণা! একবার নিজ ধর্মের ভিন্ন জাতি পাকিস্তানী কর্তৃক শোষণে বুঝেছে, আমরা নতুন প্রজন্ম হয়তো সেটা বুঝি না। তাই আগুনে পুড়েই যেন শিখতে হবে অঙার কিভাবে হয়! মোদ্দা কথা, মানুষের ধর্ম ছিল, থাকবে, কিন্তু নিজ সংস্কৃতির স্ব-অভিমান বিলিয়ে দিয়ে অন্য জাতির মত এক রঙ হয়ে ওঠা সত্যিই দেউলিয়াত্ত ছাড়া কিছু নয়। সেটা stupidity ছাড়া কিছু নয় যখন ভাবা হয় এটা যার যার খুশি। কে ফ্যাশনে রেভল্যুশনিস্ট তা তো দেখে আসছি। পোশাক তাই মিছরীর ছুরি হয়ে উঠছে কি না তা দেখতে হবে। এমনিতে মনে হচ্ছে মিষ্টি, সুন্দর, কি আর ক্ষতি করছে? আদতে তা ছুরির ফলা হয়ে বাঙালী রমণীর নিজ জাতীয়তার বোধকে নাশ করে ফেলতে পারে। আর “হিজাব” প্রতর্কে আলোচনা করা পরচর্চা বলবে তারাই যারা নিজেরা বুদ্ধিশূন্য কিংবা অন্য জাতীয়তার দালাল। বিষয়টি নিয়ে কথা উঠত না যদি সেটা উচ্চ মধ্যবিত্ত হয়ে কখনও ফ্যাশন নামে কখনও ধর্ম নামে জগাখিচুরী ব্যাখ্যা হাজির না করত। আমি কোন পক্ষ্য না নিয়ে বলছি – এটি প্রতর্ক্য, তাই আলোচনার মাধ্যমেই এটি থেকে বোধের সন্ধান মিলবে।
শেষ কথা, ধর্মীয় অনুভূতির নামে অন্য জাতির যেকোন কিছুকেই ইসলামের ভালো বলে চালানোটাও বিচার করতে হবে। বিশেষ করে সেই জাতির রঙ, symbol এসবকে সতর্কভাবে দেখতেই হবে যেখান থেকে তালেবান, আল কায়েদা আর ISIS তৈরী হচ্ছে আর ইসলামের ইমেজ একমাত্রিকতা গ্রাস করে নিচ্ছে। মূল কথা, বাংলাদেশের মানুষ আগেও মুসলমান ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে, কিন্তু জাতিতে আফগান, পশতুন, পাঞ্জাবী বা পাকিস্তানী রঙ ও বসনধারী হয়ে উঠে তার উপর ধর্মের গুনাগুন আরোপ ধর্মের সুবিধাবাদী প্রয়োগ বলেই সাব্যস্ত করা যায়, যা পাকিস্তানীদের কৌশল ছিল, কিন্তু সফল হয় নি। নিজ জাতির গর্বকে হেয় করা আর অন্য জাতির রঙ ধারনে ব্যক্তিপছন্দ থাকতে পারে, তবে সামাজিক পছন্দ বিশ্লেষণ করলে উল্টো চিত্রই পাওয়া যায়। নিজের স্বকীয়তায় ইসলাম ধারণ করলে সে ইসলামেরই গর্ব যে ইসলাম কোন জাতির স্বকীয়তা কেড়ে নেয় না বরং তার সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস ও “তাঁর” আরাধনা পদ্ধতিকে নির্মাণ করে দেয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই কোন জাতির প্রতি পক্ষপাতিত্বশীল হবেন না। ধর্মের বাইরে অন্য জাতির সংস্কৃতি পুরোপুরি অনুকরণ করলে নিশ্চিত সেই জাতির সব দোষগুলো (যেমন মধ্যযুগীয় পশ্চাদপদতা, সুন্নি মৌলবাদিতা, বিকৃত ব্যাখ্যায় ফতোয়াবাজি, জিহাদের বিকৃত ব্যাখ্যা করে জঙিবাদ ও যথেচ্ছাচার etc.) আমাদের সমাজেও আসবে। আর তা বিনা বাক্যব্যয়ে বিনা প্রতিরোধে মেনে নেব তখন যখন সত্যিই আমরা স্বকীয়তা, স্বাভিমান ও বোধ হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাব। নাকি এখনই সেই অবস্থায় এসে আমরা দাঁড়িয়েছি? মুসলিম অধ্যুষিত সব দেশগুলো কি একে অন্যের সাংস্কৃতিক আধিপত্য মেনে নেয়? যদিও ধর্ম পালনে তো তারা এক। এটা বুঝতেই হবে আসছে দিন cultural economy-র যুগ, নিজের “culture’ culture ( চাষ ) করতে না পারলে যুদ্ধ ছাড়াই যে কোন জাতির লোককে morally, ethically, ideologically ও economically শুষে নিয়ে দেউলিয়া করে দেয়া সম্ভব। আমরা বাঙালীরা তো এত হীনবুদ্ধির মানুষ ছিলাম না, নাকি ছিলামই?

খুবই চমতকার বিশ্লেষণ করেছেন। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় অনেকেই আপনার এ লেখাটি বুঝবেনা। তবে আপনার শেষ লাইনের বেলায় বলতে হয় আমরা সবসময়ই হীনবুদ্ধির মানুষ ছিলাম, তবে অতীতের চেয়ে বর্তমানে বেশি গোড়া, উগ্র আর বিকৃত ধার্মিক হয়ে গেছি। আগে নিজেরা এতটা উগ্র মুসলিম ছিলামনা যতটা এখন হয়েছি।

মানবাধিকারে শ্রদ্ধাশীল কোন মানুষ এভাবে ভাববে না। জিন্স-শার্টের সংস্কৃতি মানা গেলে হিজাবে কেন সমস্যা ? কেউ পছন্দের কারণে হিজাব পড়লে সেটাও তার অধিকার। সেখানে সমস্যা দেখাটা বাতুলতা। ব্রিটিশ আমলে জাতীয়তাবাদী চিন্তার উন্নয়নের সময় পুরুষরা যেভাবে ধুতি-লুঙ্গি ছেড়ে কোট-প্যান্টে অভ্যস্ত হতে শুরু করল, মেয়েরা কিন্তু সেভাবে পারে না। কারণ শাড়ি দিয়ে জাতীয়তাবাদ ধরে রাখার প্রবল চেষ্টা ছিল। পুরুষতান্ত্রিক পলিটিক্স ছিল।সেটা না হলে নানী-দাদীদের গাউনে অভ্যস্ত দেখতেন। পুরুষের পোশাকের পরিবর্তিত ট্রেন্ড নিয়ে তখন এত শোরগোল হয়নি। তাহলে কেন এক নারী পোশাকের পরিবর্তনে আজ এত শঙ্কায় ভুগছেন? পোশাক দিয়ে মৌলবাদ যাচাইয়ের চিন্তা এক ধরনের গোঁড়ামি।

তো বর্তমান পাশ্চাত্য পোশাক মনে হচ্ছে আমাদের সংস্কৃতির অংশ ছিল ? 😉 সবকিছুতেই মৌলবাদ খুঁজে পেলে তো সমস্যা । দেশ আফগানিস্থান হচ্ছে , সউদি হচ্ছে ইত্যাদি নিয়ে এতো কথা কিন্তু দেশে আমেরিকান কালচারের হলে তা নিয়ে সমস্যা নাই । আজিব চিড়িয়া …

জিন্স টি-শার্ট,স্যুট,ব্লেজার এগুলো কোনটাই বাঙ্গালি সংস্কৃতির মাঝে ছিলো না,
এক কালে এদেশে মানুষ কলেজে ক্লাস করতো লুঙ্গি পড়ে,কোথা থেকে যে এসব ফিরিঙ্গি কালচার ঘারে চেপে বসলো কে জানে।যাহোক আমি বাসাতেও লুঙ্গি পরি না,স্পোর্টস টাউজার পরি।
যাহোক আপনি কর্পোরেটদের চাপিয়ে দেয়া ড্রেসকোড সম্পর্কে কি ভাবেন সেটা জানবার ইচ্ছে,ধরুন ৭১টিভিতে যে খবর পাঠিকারা স্যুটে আসে সেসব তো বাঙ্গালি কালচারের মধ্যে নয়,এগুলো কি আপনাকে ভাবায় তো নাকি যতো ভাবনা সেই হিজাব নিয়ে।
সমাজ সংস্কৃতি বিবর্তনের ধারাতে বদলায়,কিছু ফিউশন তৈরি হয়ে সহাবস্থান করে আর অনেকটাই অপরিবর্তিতভাবে চলতে থাকে।
যোগ-বিয়োগের বা ফিউশনের থেকে বড় কথা হলো যোগ,বিয়োগ বা ফিউশন হয়ে সেটা ভালো দিকে যাচ্ছে নাকি মন্দ দিকে,বিবর্তনের বাকগুলো যেন সতন্ত্রতা এবং নব্যরুপ যেন ভালোর বিকাশ হলে আমি ব্যক্তিগতভাতে আপত্তি অনুভব করি না,সেটা কোথা থেকে আসলো সেটা নিয়েও ভাবি না।
আর পোষাক পারবার বিষয়ে যার যারু রুচি অভিরুচি তবে নর বা নারীর স্বকৃয় লুক বজায় রাখা বা পোষাকে পার্শ্বপ্রতিক্রয়া বর্ধকতার বোধের ফলে পোষাকে শুধু শালীনতার বিষয়ে নজর রাখলে যথেষ্ট,লুক পরিবর্তন,কোথা থেকে জুড়ে বসল সেথা ভাবনার মধ্যে পরবার বিষয় মনে করি না,লেখকে চিন্তাবিদ মনে করি না,তিন প্রকৃতিস্থতই দুঃচিন্তাবিদ।
এরপরও আমি কিন্তু মুক্তি চিন্তায় বিশ্বাসী।
কান্ড,শাখা এবং শাখাতে ধরা ফল,ফুল,ফ্লেভার,সৌরভকে অশ্বীকার করি কিভাবে,কান্ডের নিচেটা সে তো অনলাইন তথ্য আর্কাইভ বা পুস্তিকাতে ভ্রমন পর্যন্তই যথেষ্ট,ঐ ঢেকে মিউজিয়ামেই থাক না।
মামুন.pb

পর্দা করেন আর যাই করেন, আপনার দেশ আর সংস্কৃতিকে যেন চেনা যায় সেই রকম পোশাক পড়েন (কিংবা উদ্ভাবন করেন)। অর্থাৎ এটা যে অতীতের কোন অনুকরন করতে হবে আমি সেটা বলছি না, নতুন উদ্ভাবনও (new design) হতে পারে যেটার ভিজ্যুয়াল দেখে যেন চেনা যায় এটা বাংলাদেশ, এটা এদের সংস্কৃতি, এটা এদের ভাষা, এটা এদের ইতিহাস, এটা এদের ট্রেন্ডস, এটা এদের নতুন (স্বতন্ত্র ও মৌলিক এককথায় identifiable) ফ্যাশন সেন্স, এটা এদের ধর্ম (নিশ্চয়ই শুধু ইসলাম নয়, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, বিভিন্ন সম্প্রদায়, মতের যেমন বাউল, পীর, ফকিরী, এছাড়া বিভিন্ন indigenous culture-এর জনগোষ্ঠীও এখানে আছে, কিংবা নব্য উচ্চশিক্ষিত ফিলোসফিকাল বিলিভার যেমন – atheist, communist, post-modernist ইত্যাদি)। এটা এদের সংস্কৃতি, এটা এদের ধর্ম – এটা যেন জীবিত থাকে। কোরানে বা বেদে বা মহাভারতের উদাহরণ দিয়ে পর্দা বা অবরোধের নমুনা যে ধর্মীয় এবং পালনীয় সেটা অনেকে এখানে বলছেন। কিন্তু কোরানে কিন্তু পোশাকের ডিজাইন এঁকে দেয়া নাই। ফলে পর্দা করলেও তা কেন বাঙালী বা বাংলাদেশে স্বতন্ত্র identifiable হবে না (যখন ফটোগ্রাফি কিংবা ফিল্মে কিংবা আন্তর্জাতিক মিডিয়ার রিপোর্টে রিপ্রেজেন্টেড হবে)। পর্দা বা ধর্মের নামে শুধু আফগানিস্তান বা পাকিস্তানের ফ্যাশন adopt করলে বাংলাদেশটাকে একটুকরো আফগানিস্তান বা পাকিস্তান বলে বাইরের দেশগুলোতে চিনবে যেমনটা western দিয়ে ভরে গেলেও ইউরোপ-আমেরিকার সাংস্কৃতিক উপনিবেশ ভাবতে পারে। তত্ত্বকথা আলোচনা করে গুরুগম্ভীর করতে না চাইলেও বলতে হয়, এখন বিশ্বে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনেই যে কোন দেশকে কলোনীর মতো করে suck করা সম্ভব (কারন একবার বিদেশী হেজিমনিতে অভ্যস্ত ও নির্ভরশীল হয়ে গেলে ওই সংস্কৃতির সকল পন্যের ভোক্তা ওই নব্য সাংস্কৃতিক দেশটাকে করা যাবে)। এই কারনেই এখন যেরকম হিজাব এখানে ছড়িয়ে পড়ছে তা শুধু কাকতালীয় পছন্দ ভাবা ভল হবে, সুনির্দিষ্ট ভাবে ইসলামের নতুন মৌলবাদের (তালেবান, ISIS, আল কায়েদা etc.) সাংস্কৃতিক হেজিমনির adaptation এই ডিজাইনের হিজাবগুলো (ইসলাম পূর্বেও এদেশে ছিল, কিন্তু তখন খুশিমনে কোন পোশাকই viral হয়ে যায় নি। ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, একবার পাকিস্তানী শাসনামলে শাড়িকে replace করে সালোয়ার কামিজকে শহুরে মেয়েদের কাছে হেজিমনিক্যালী adopt করা হয়েছিল (ফ্যাশনের নামে বাঙালী নারীর সাংস্কৃতিক স্বতন্ত্রতা বিনষ্ট করার জন্য : এটা করা হত উচ্চ মধ্যবিত্তের পার্টি কিংবা অনূষ্ঠানগুলোতে তৎকালীন পাঞ্জাবী elite পুরুষগণ কর্তৃক বাঙালী শিক্ষিত রমণীদের শাড়ি সেখানে গেলে unfashionable, গ্রাম্য, অনাকর্ষনীয় – এমন হেজিমনি viral করার মাধ্যমে। ফেমিনিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে শাড়িরও patriarchal cause আছে, কিন্তু সেটি বাঙালী বলে সেসময় identifiable ছিল। যে কোন উন্নত দেশই পরবর্তীতে নতুন ফ্যাশন adopt করে নেয়, কিন্তু তাতে তাদের ফ্যাশন জগতে উদ্ভাবনের গৌরব জড়িত থাকে বলে তাতে তাদের জাতির গৌরবই ছড়িয়ে পড়ে. সাংস্কৃতিক দেউলিয়াত্ব নয়।
আর মনে রাখতে হবে বিশেষ যুগে বিশেষ ট্রেন্ড just ব্যক্তিইচ্ছা ভাবাটা একটা সারফেস স্ট্রাকচারের ঘটনা, ডিপ স্ট্রাকচার বিশ্লেষন করলে দেখা যায় কমোন চেতনা কখনও খুশি দিয়ে চালিত হয় না, হয় বুদ্ধিবৃত্তিক সচেতন সমাজ পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত (প্রগতির জন্য) নয়তো সূক্ষ্ম সাংস্কৃতিক হেজিমনি দ্বারা চালিত দাস চেতনা যা তারা নিজেরা চালক নয়, চালিত বলে বোকার মত গ্রহন করে (কিংবা বুদ্ধির দেউলিয়াত্তে গ্রহন করতে মজবুর হয়)।
আজকের যুগে অনেক অবস্থার মধ্যে নব্য ইসলামী মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদ (তালেবান, আল কায়েদা, ISIS) একটি বিশেষ অবস্থা বটে। আর অধিকাংশ ধার্মিক, শান্তিপ্রিয় ও দয়ালু মুসলমান মাত্রেই জানে এখানে ইসলামের বিভিন্ন ভার্সন ছড়িয়ে পড়েছে এবং বিশেষ অপব্যাখ্যার দ্বারা ফায়দা তোলা হচ্ছে। রাজনৈতিক ক্ষমতা ভোগ ও সাম্রাজ্যবাদী অভিলাষে ইসলামের নতুন হেজিমনিকরণ ঘটছে (যদিও ওসব দেশে নিপীড়নের ইতিহাসও এখানে বিবেচ্য হবে)। কিন্তু বাংলা ও বাঙালীর ইতিহাস অনেক স্বতন্ত্র রকমের। বাঙালী মনীষাও যে কোন গোড়ামীকে কোন যুগেই পাত্তা দেয় নি (কি বৌদ্ধ যুগে, কি নতুন হিন্দু যুগে, কি মুঘল-পাঠান যুগে কি বৃটিশ-পাকিস্তানী শাসনামলে। যদিও আমরা শেষদিকে “বৃটিশের ভাগ কর, শাসন কর” নীতির চূড়ান্ত সাফল্যে বাঙলায় দাঙা দেখলাম (যদিও এতে হিন্দু মৌলবাদী ও মুসলিম মৌলবাদীদের বেশ দায় ছিল)। কিন্তু বাংলার স্বতন্ত্রতা হল এই ত্রিমুখী ধারা এখানে সক্রিয় থাকলেও কখনও জনগনের “খুশিতে” মূলধারা হয়ে উঠতে পারে নি, সবসময়ই মৌলবাদী ধারা এখানে অজনপ্রিয় রূপে মুষ্টিমেয়র ধারা ছিল। সবসময় শক্তিশালী ছিল জাতীয়তাবাদী ধারা (কি ঈশা খাঁদের সময়, কি ভাষা আন্দোলান বা কি মুক্তিযুদ্ধ)। তাই ৪৭’র দাঙাবাজের মৌলবাদী যে আংশিক সত্ত্বাটি বাংলায় মৌলভিত্তি পায় সেটি রয়ে যায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে। কিন্তু সেটি থেকে নব্য জঙিবাদী ইসলামের অপব্যাখ্যাটি এখানে মূলধারা হয়ে উঠে সকল পূর্ব ইতিহাস মুছে ফেলতে পারবে যুদ্ধ, বোমাবাজী ছাড়া আরও তিনটি শর্তে……….এক. অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী শক্তির মত cultural hegemony মূলধারায় adopt করাতে পারলে (শিক্ষা, বিকৃত ইতিহাস বা ভুল তথ্য, জ্ঞান এগুলো বিশ্বাস করাতে পারলে), দুই. মূলধারার যারা গ্রহন করবে তারা সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াত্তে ভুগলে, তিন. যারা শেখাবে (শাসক বা রাষ্ট্র) তারা অসৎ, অদেশপ্রেমিক কিংবা বুদ্ধিবৃত্তিক মূর্খ হলে। যেসব দেশে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনে (কি ওয়েস্টার্ন বা কি মধ্যপ্রাচ্যীয়) নিজস্ব সংস্কৃতির বিলোপ ঘটেছে বা নতুন স্বতন্ত্রতায় গড়ে উঠতে পারে নি তাদের ক্ষেত্রে এ বিষয়গুলি মিলিয়ে নিন। খোদ মধ্যপ্রাচ্যেরই অনেক দেশ এভাবে দেউলিয়া হয়েছে যদিও ইসলাম পৃথিবীর নানা দেশে, নানা ভূমিতে নানা রঙে ধর্মীয় স্ব-মহিমায় বিদ্যমান ছিল, এখনও threatened হলেও কিছুটা আছে। এই নানা রঙ ও এক সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ-য় বিশ্বাস এটাই ইসলামের শক্তি ও সৌন্দর্য। এক রঙ এক পোশাক (সমতা অর্থে নয়, সাংস্কৃতিক সতন্ত্রতা অর্থে) করে দাও এটা ইসলাম কখনই বলে না। কারণ ইসলামের বিশ্বাসে আল্লাহই কি সংস্কৃতির এই বৈচিত্র্য, গাত্রবর্ণের বৈচিত্র্য, ভূমির রূপের বৈচিত্র্য ও প্রকৃতির রূপের বৈচিত্র্য সৃষ্টি করেন নি? তিনি কি তবে তা খারাপ হবে বলে করেছিলেন যে তা না করে সব এক color করে দিতে হবে? আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামের রঙ এক নয়, যা পরবর্তীতে এক রঙ করার চেষ্টা তা কোন কোন বিশেষ জাতি, বিশেষ সম্প্রদায় বা বিশেষ রুচির একমাত্রিকতার আগ্রাসনের ফসল। আর সেটি বলপ্রয়োগ জনিত শাসন-শোষনের একটি আদর্শগত অস্ত্র। কোন আফগান শাসক যদি বাংলাদেশ দখল করে নিত তবে সে মুসলমান হলেই কি তা খুশিতে মেনে নেয়ার মত বিষয় হবে? তাহলে তো মুঘল আধিপত্যও ঈশা খাঁ’রা মেনে নিলে বাঙালীর গর্বে যায় আসতো না। যেকোন আধিপত্যশীল আক্রমণকারীই ধর্মের ধুয়ায় জাতীয়তাবাদী বাধার সম্মুখীন না হলে তো তা তার পোয়া বারো দশা !! বাঙালীর তেমন ঘটের বুদ্ধিতে স্ব-অভিমান না থাকলে এ দেশের লোক বুঝত, অন্য জাতির কাছে পরাধীনতা (তা নিজ ধর্মেরই হোক) কি জিনিস! কি তার যন্ত্রণা! একবার নিজ ধর্মের ভিন্ন জাতি পাকিস্তানী কর্তৃক শোষণে বুঝেছে, আমরা নতুন প্রজন্ম হয়তো সেটা বুঝি না। তাই আগুনে পুড়েই যেন শিখতে হবে অঙার কিভাবে হয়! মোদ্দা কথা, মানুষের ধর্ম ছিল, থাকবে, কিন্তু নিজ সংস্কৃতির স্ব-অভিমান বিলিয়ে দিয়ে অন্য জাতির মত এক রঙ হয়ে ওঠা সত্যিই দেউলিয়াত্ত ছাড়া কিছু নয়। সেটা stupidity ছাড়া কিছু নয় যখন ভাবা হয় এটা যার যার খুশি। কে ফ্যাশনে রেভল্যুশনিস্ট তা তো দেখে আসছি। পোশাক তাই মিছরীর ছুরি হয়ে উঠছে কি না তা দেখতে হবে। এমনিতে মনে হচ্ছে মিষ্টি, সুন্দর, কি আর ক্ষতি করছে? আদতে তা ছুরির ফলা হয়ে বাঙালী রমণীর নিজ জাতীয়তার বোধকে নাশ করে ফেলতে পারে। আর “হিজাব” প্রতর্কে আলোচনা করা পরচর্চা বলবে তারাই যারা নিজেরা বুদ্ধিশূন্য কিংবা অন্য জাতীয়তার দালাল। বিষয়টি নিয়ে কথা উঠত না যদি সেটা উচ্চ মধ্যবিত্ত হয়ে কখনও ফ্যাশন নামে কখনও ধর্ম নামে জগাখিচুরী ব্যাখ্যা হাজির না করত। আমি কোন পক্ষ্য না নিয়ে বলছি – এটি প্রতর্ক্য, তাই আলোচনার মাধ্যমেই এটি থেকে বোধের সন্ধান মিলবে।
শেষ কথা, ধর্মীয় অনুভূতির নামে অন্য জাতির যেকোন কিছুকেই ইসলামের ভালো বলে চালানোটাও বিচার করতে হবে। বিশেষ করে সেই জাতির রঙ, symbol এসবকে সতর্কভাবে দেখতেই হবে যেখান থেকে তালেবান, আল কায়েদা আর ISIS তৈরী হচ্ছে আর ইসলামের ইমেজ একমাত্রিকতা গ্রাস করে নিচ্ছে। মূল কথা, বাংলাদেশের মানুষ আগেও মুসলমান ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে, কিন্তু জাতিতে আফগান, পশতুন, পাঞ্জাবী বা পাকিস্তানী রঙ ও বসনধারী হয়ে উঠে তার উপর ধর্মের গুনাগুন আরোপ ধর্মের সুবিধাবাদী প্রয়োগ বলেই সাব্যস্ত করা যায়, যা পাকিস্তানীদের কৌশল ছিল, কিন্তু সফল হয় নি। নিজ জাতির গর্বকে হেয় করা আর অন্য জাতির রঙ ধারনে ব্যক্তিপছন্দ থাকতে পারে, তবে সামাজিক পছন্দ বিশ্লেষণ করলে উল্টো চিত্রই পাওয়া যায়। নিজের স্বকীয়তায় ইসলাম ধারণ করলে সে ইসলামেরই গর্ব যে ইসলাম কোন জাতির স্বকীয়তা কেড়ে নেয় না বরং তার সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস ও “তাঁর” আরাধনা পদ্ধতিকে নির্মাণ করে দেয়। আল্লাহ নিশ্চয়ই কোন জাতির প্রতি পক্ষপাতিত্বশীল হবেন না। ধর্মের বাইরে অন্য জাতির সংস্কৃতি পুরোপুরি অনুকরণ করলে নিশ্চিত সেই জাতির সব দোষগুলো (যেমন মধ্যযুগীয় পশ্চাদপদতা, সুন্নি মৌলবাদিতা, বিকৃত ব্যাখ্যায় ফতোয়াবাজি, জিহাদের বিকৃত ব্যাখ্যা করে জঙিবাদ ও যথেচ্ছাচার etc.) আমাদের সমাজেও আসবে। আর তা বিনা বাক্যব্যয়ে বিনা প্রতিরোধে মেনে নেব তখন যখন সত্যিই আমরা স্বকীয়তা, স্বাভিমান ও বোধ হারিয়ে দেউলিয়া হয়ে যাব। নাকি এখনই সেই অবস্থায় এসে আমরা দাঁড়িয়েছি? মুসলিম অধ্যুষিত সব দেশগুলো কি একে অন্যের সাংস্কৃতিক আধিপত্য মেনে নেয়? যদিও ধর্ম পালনে তো তারা এক। এটা বুঝতেই হবে আসছে দিন cultural economy-র যুগ, নিজের “culture’ culture ( চাষ ) করতে না পারলে যুদ্ধ ছাড়াই যে কোন জাতির লোককে morally, ethically, ideologically ও economically শুষে নিয়ে দেউলিয়া করে দেয়া সম্ভব। আমরা বাঙালীরা তো এত হীনবুদ্ধির মানুষ ছিলাম না, নাকি ছিলামই?

Obosshoi Anondomoyi shobto ta kolkatar..
Fao peachal parte aishen na. Globailzation er aggression e bangali bangali culture kothay dhua hoe ure jabe dekhen.

Pure Bangla culture er dress akhon keu I aar pore na male, female sobai pore non-Bengali dress. Aj koijon pursh dhuti. lungi pore??? Koyon meye shari pore?!

Powerful culture er shamne weak culture tike na..

লেখিকা লিখেছেন “””আমার যতদূর ধারণা, এই হিজাবের সঙ্গে ধর্মীয় আচার-পালনের যোগসূত্র খুব কম”””

— না জেনে ধারনার বশবর্তী হয়ে মন্তব্য করা আনুচিত।

Lets see what religions instruct women about covering head.

[Quran 24:31] And say to the believing women that they cast down their looks and guard their private parts and do not display their ornaments except what appears thereof, and let them wear their head-coverings……(Continues)

[1 Corinthians 11:6] For if a woman does not cover her head, she might as well have her hair cut off; but if it is a disgrace for a woman to have her hair cut off or her head shaved, then she should cover her head. (NIV)

[Rig Veda ] “When Brahma has made you a woman, you should lower your gaze and should not look up. You should put your feet together and you should not reveal what the garment and the veil conceals.”
[Rig Veda Book no. 8 Hymn no. 33V. no. 19]

আসলেই সঠিক জ্ঞানের অভাব মানুষকে কতটাই নিচে নামিয়া দেয়, তা এই লেখিকার পোস্ট পড়লেই বোঝা যায়।

যে নারী স্বেচ্ছায় হিজাব পড়ে তার ব্যাপারে কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। কিন্তু যে নারী স্রেফ ফ্যাশনের বশে হিজাব পড়ে তার ভণ্ডামি নিয়ে অবশ্যই প্রশ্ন তোলা যায়। হিজাব পড়ে নিজেকে ধার্মিক প্রমাণের এই প্রচেষ্টা খুবই নিন্দনীয়। আর বাঙ্গালী শিক্ষিত উচ্চবিত্ত-মধ্যবিত্ত নারীমহল বর্তমানে এই প্রতারণাটুকু করে চলেছে। আর এর সাথে যুক্ত হয়েছে হিজাবকে ইসলামী পোশাক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার এক ঘৃণ্য প্রয়াস। অনেক মেয়েকে তার স্বামী কিংবা বাবা-মা জোর করে হিজাব পড়তে বাধ্য করাচ্ছে পর্দার কথা বলে। এটাই সবচেয়ে বিপজনক যে মানুষের ইচ্ছের বিরুদ্ধে অনেকে হিজাব পড়তে বাধ্য হচ্ছে পরিপার্শ্বের চাপে। মানুষের মগজে এটা ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে যে হিজাব পড়লে সে সতী নারী, সে ভালো নারী, যে হিজাব পড়েনা সে বাজে মেয়ে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার এতে সেইসব মুখোশধারী ভণ্ড হিজাবীদের চেয়েও লাভবান হচ্ছে হিজাব প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান তথা দর্জির কারিগর কিংবা টেইলার্স বা পোশাক বিক্রেতা। একজন নারী হিজাব পড়বে নাকি বোরখা পড়বে নাকি বিকিনি পড়বে সেটা তার একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রত্যেকের স্বাধীনভাবে চলাফেরার অধিকার আছে। কারো ব্যক্তিস্বাধীনতায় কারো হস্তক্ষেপ করার কোন অধিকার নাই। কিন্তু যদি পাশাপাশি যদি দুজন নারী হাটে যাদের একজন হিজাব পড়েছে আর একজন হিজাব পড়েনি এবং হিজাব পড়েনি বলে যদি তাকে কটু কথা শুনতে হয় এবং পাশেরজনের সাথে তুলনায় পড়তে হয় তো বুঝতে হবে যে হিজাব জিনিসটা আমাদের মাঝে মৌলবাদী চিন্তাটা ঢুকিয়ে দিয়েছে এবং এটাই সবচেয়ে বিপজ্জনক। হিজাব না পড়ায় যদি আরেকজনকে বিপদে পড়তে হয় বা বাজে মেয়ে উপাধি পেতে হয় তবে আমি সে হিজাবের প্রসারের বিপক্ষে। একটা ছোট্ট কাপড় যদি দুটো মানুষের মাঝে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিগত পার্থক্য জন্ম দিতে শেখায় তবে সে পোশাক আদতে ঘৃণায় জন্ম দেয়। আগে সমাজকে হিজাব অপরিধিতাদের ঘৃণ্য দৃষ্টিতে দেখার চিন্তাভাবনাটা রোধ করতে শেখান তারপর না হয় হিজাবের বৈধতা নিয়ে একটা মতৈক্যে আসা সম্ভব। তবে এটুকু নিশ্চিত থাকেন যে আজকের এই ব্যাপক হিজাব পরিহীতাদের সিংঘভাগই সেদিন তাদের আসল খোলস ছেড়ে বেড়িয়ে আসবে।

I don’t know what to write, but let me try something.. First of all writer is having lack of knowledge about Concept of Hijab but she dose have some point. Now a days it’s being commonly sending wrong messages to others the way most of the women covering up their head in the name of HIjab. In Islam their is a clear specification of Hijab and the way it should be doing it and it’s principal purpose of it. It is clearly not for a fashion. you may look good with it but that it is different point. Hijab concept not limited to the head only. yes, she is right, it should be covered hole body such a way as others can’t be able to visualize your body shape that’s all, whither you do it with burkha or sharee or whatever means of cloths. Now days, the way people wearing Hijab it’s mostly wrong and that’s why writer felt encourage to write this article and I wouldn’t blame her. Secondly, culture and Islam is two different issue and she has mixed it up. Islam did not started from 1971 and writer should not forget this. If you want to talk about culture, it’s a wide argument and I wouldn’t like to go that way and wist my time. Rather, I would pry for those started even wrongly to cove their one part of the body, may Allah give them blessings and knowledge to understand how to do proper way of doing Hijab and it’s purpose. Hijab means not only head cover, it’s full body covering which refrain men’s (Except Husband) from sexual temptation towards to you (Women). Rabbi Zidni Elma.

আমি বিস্মিত, মমাহত হিজাবের পক্ষে এতো কমেন্ট দেখে। ফেস বুকে একটি পেজ আছে ‘নো টু হিজাব।’ হিজাব একটা মহামারি। মোটেও ধমর কারণে দেশের অধিকাংশ মেয়ে হিজাব পড়েনা। আমরা দুই বোন একবার এক ডাক্তারের চেম্বারে অপেক্ষা করছিলাম, আমরা দুজন ছাড়া সেখানের সব নারীর পরনে হিজাব। আযানের সময় শুধু আমরা দুজনই নমাজ পড়লাম। গত জোট সরকারের আমলে বেশ কিছু শিক্ষা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান নারী শিক্ষাথী ও কমীদের জন্য হিজাব বাধ্যতামুলক করেছিল, সে থেকেই তার বিস্তার। এটি আমার অনুমান।এ ছাড়া মধ্য প্রাচে আমাদের যে লাখ লাখ কমী আছেন, তাদের পরিবারও হিজাব পড়ছে, তাদের দেখে তাদের আশেপাশের অনেকে হিজাবে আকৃষ্ট হচ্ছে।।শিক্ষা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সামনে জামায়াতের নারী কমীরা হিজাবের পক্ষে পচরনা চালাতো। অল্প বয়সী মেয়েদের সহজে কনভিন্স করা যায়। মেয়ে যখন হিজাব পড়ে মা বাধ্য হয় হিজাব পড়তে। এক বন্ধুকে দেখে আরেক বন্ধু,বোনকে দেখে আরেক বোন। এভাবে হিজাবের ব্যাপ্তি। প্রবীন নারী সাংবাদিক নুরজাহান বেগম একবার বলেছিলেন, হিজাব এখন ফ্যাসান,সময়ের স্রোতে তা বিলুপ্ত হবে। আমরা যারা হিজাবকে পছন্দ করিনা তারা সেই সময়ের অপেক্ষায় আছি।পুরুষরা যত আধুনিক আর প্রগতিশীল হোক তারা নারীদের এই হিজাবপড়াকে পছন্দই করে। স্ত্রী যদি প্রাশ্চাতের পোশাক পড়েন তারা আপত্তি জানাবেন, বিদেশী সংস্কৃতি বলে কিন্তু হিজাবে তাদের কোন আপত্তি নেই। অথচ হিজাব সম্পূনভাবে একটি বিদেশী পোশাক।এমন কি যারা ধম কম প্রতি অনুগত নয় বরংচ অপছন্দ করেন, তারাও স্ত্রী বা কন্যার হিজাব পরিধানে কোন আপত্তি জানন না। যারা জিনস শাটের কথা বলছেন, এই পোশাক বহুকাল আগ থেকে এদেশের আধুনিক নারীরা পরে আসছে।

আপনাদের মতো মেয়েরা নিজেদের সেইফসাইডে রাখতে বলেন, আমরা নামাজ পড়ি, হ্যান-তান। বাট আপনাদের মোল্লার দৌড় জানা আছে। জিনস বহুকাল আগে থেকে আধুনিক নারীরা পড়ে থাকেন! বহুকাল কবে থেকে শুরু হইছে? যেহেতু আগে জিন্সের প্রচলন এদেশে না থেকেও এখন চলছে, হিজাব ও চলবে। প্রবীন সাংবাদিক কোনো ভবিষ্যৎবক্তা না। একদল মাথা খুলবে, কাপড়ের সাইজও ছোট রাখবে, আরেকদল পোশাকী হবে। আপনাকে কেউ বলছে না হিজাব করতে, ইয়োর চয়েজ! কারো পোশাকও ভাল না লাগলে চোখ বন্ধ করে চলেন। আমার বি কিনি পড়ে বিচে হাটা দেখতে ভাল লাগে না। এই জন্যে আমি তাদের কমেন্টবক্সে গিয়ে কিস্তি মারি না। আপনাদের কমেন্ট করার জন্যে কেউ পে করে কুক্না জানা নেই। বারবার বলতেছেন হিজাব বিদেশী পোশাক। তাহলে কি পড়া যাবে না? আধুনিক নারীদের জিনস কি আমাদের পোশাক নাকি আমাদের গার্মেন্টসের পোশাক নাকি আপনার মায়ের বানানো? আপনার অপেক্ষাটাই বৃথাই যাবে। এই দেশে জিনস এসে জিনস যদি থেকে যায়, হিজাব থাকবে। যে চুল দেখাতে চায় না, কেন দেখাইতে বলেন। আপনি কষ্ট করে প্রতিদিন শ্যাম্পু-কন্ডিশনার মাখেন, সেই চুল দেখাই দুইটা পয়সা কামাইতে পারলে অন্যের কি?

ছবির যে ছবিটি দিয়ে লেখিকা আবহমান বাংলা বলতে চাইছেন, তাতে আমার আপত্তি নেই। কিন্তু তিনি কি একদিনের জন্যও সেই সাদা কামিজ বা সাদা শাড়ি পড়েছেন। এই ঢাকাতে কত উদ্ভট ফ্যাশন শো হয়, কেউ প্রতিবাদ করে না, কেউ করতে গেলে হয়ে যায় মেৌলবাদী, সেখানে একটা “হিজাবিস্তা-ফ্যাশানিস্তা” নিয়ে এত ভয় কেন? অনেকে এমন পোষাক পরে যে দিকে চাইলে চোখটা ফিরিয়ে নিতে হয়, লজ্জায়, ঘুণায়। কই লেখিকাদের তো তখন মাথা তুলতে দেখি না। মাথায় দুই ভাজ দিক না, চেৌদ্দ ভাজ দিক, যদি সেই মেয়ে গরম সহ্য করতে পারে তাহলে অন্যদের এত চুলকানি কেন? আপনারাই তো বলেন, এদের অধিকাংশই ধর্মীয় কারণে পড়ে না, তাহলে মেৌলবাদী হয়ে যাওয়ার ভয়ও তো নেই। তারপর কেন? ছেলেরা আজকাল এমন প্যান্ট পরে, একটু ঝুকলে পিছনের লোকের বমি পায়, কই তার বিরুদ্ধে তো কোন কথা নাই, টুপি দেখলে কেন এত চুলকানি।
আধুনিকতা দেখাবেন দেখান। আপত্তি তো আমরা করছি না। মাঝে মধ্যে রাস্তাঘাটে ছেলে মেয়ে অনেকেরই এমন পোষাক দেখি, মনে হয় ঠাশ করে চড় বসিয়ে দিয়ে বলি, যা বাড়ি যা। ভাল করে কাপড় পড়া শিখে তারপর বাড়ি থেকে বের হোস। কিন্তু করি না। কারণ গণতান্ত্রিক দেশ। তারও পরার অধিকার আছে। তাদের যতটুকু খোলার স্বাধীনতা আছে, অন্যদের অন্তত ঢাকার তো অধিকার থাকবে।
তাই বলছি, নিজের চরকায় তেল দেয়া সবার জন্যই ভাল। তাতে নিজেও ভাল থাকা যাবে, অযথা কেউ কোথাো পিছলাবেও না।
ধন্যবাদ সবাইকে।

একদিকে লেখিকা বলছেন হিজাব একটি ফ্যাশনের পোষাক হয়ে গিয়েছে। যাঁরা পরছেন, তাঁরা বেশীরভাগই ধর্মের দ্বারা প্রণোদিত হয়ে পরছেন না। যদি তাই হয় তবে এই হিজাব পরার কারনেই ভবিষ্যতে বাংলাদেশ একটি মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত হবে বলে লেখিকা যেই আশঙ্কা করছেন, তা অযৌক্তিক।

তবে বাংলাদেশে ইসলামী মৌলবাদ যে একেবারেই নেই, তা নয়। এবং এই মৌলবাদ সহনীয় থেকে শুরু করে ভয়ঙ্কর পর্যন্ত বিভিন্ন মাত্রায় বিরাজ করছে। কিন্তু এর জন্য হিজাব দায়ী নয়। বরঞ্চ হিজাবকে টার্গেট করলে এই মৌলবাদকেই আরও উসকে দেয়া হবে। এই মৌলবাদের মূল খুজে বের করে সেখানে আঘাত করতে হবে। তাতে যদি হিজাব পরার প্রবণতা কমে, তা কমতেও পারে। আর যদি না কমে, তবে সেটাও কারও শীরঃপীড়া বা গাত্রদাহের কারন হওয়া উচিত নয়। যদি “হিজাব আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়” বলে হিজাবের প্রসারকে কেউ অবাঞ্ছিত বলে গণ্য করেন, তবে মনে রাখতে হবে যে কোনো সংস্কৃতিই চিরস্থায়ী নয়। শাড়ীতে মোড়ানো বাংলা সংস্কৃতিকে বেঁচে থাকতে দেখলে লেখিকা যেই সন্তষ্টি লাভ করবেন, তাঁকে সেই সন্তোষ প্রদানের দায়ীত্ব কোনো সমাজের কোনো ব্যাক্তিরই নেই।

একটাই অভিমত, এত সস্তা চিন্তাশক্তি দিয়ে এরকম অদূরদর্শী ও অগভীর চিন্তা ব্লগে প্রকাশ করে এসব সৃজনশীল মাধ্যমগুলোর গুরুত্ব নষ্ট করবেন না। বিশেষত, যখন বিষয়গুলো নারী অধিকার এর মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কিত। আরো চিন্তাশীল হউন, এই কামনায়।

আজ হিজাব পরেছে বলে এটা বিদেশি সংস্কৃতি হয়ে গেল, আজ যদি ওরা বিকিনি পরে তবে নিশ্চয় খুশিতে গদগদ হয়ে বলতেন দেশ আধুনিক হচ্ছে।
আসলে তোমার কষ্টের কারণটা বিদেশি সংস্কৃতি নয়, তোমার কষ্টের কারন ইসলাম, ইসলামি সংস্কৃতি।
ফাজলামোরর জায়গা পাওনা।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে ইসলাম বিরোধী কিছু আছে বলে আমি জানিনা, কেউ বললেও সেটা আমি বিশ্বাস করিনা। তবুও যদি কেউ বলে ইসলাম বিরোধী কোন উপাদান মুক্তিযুদ্ধে ছিল তবে সে চেতনার মুখে আমি থুথু দিই।

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ শব্দটির প্রতি আপনার আপত্তি আছে, তাই বুঝে হোক আর না বুঝে হোক চেতনা শব্দটির আড়ালে আপনি মুক্তিযুদ্ধকেই গালি দিয়ে ফেলেছেন, এটা অবশ্য আপনাদের এক ধরণের স্বভাব। বিকিনি পড়লে কেউ আধুনিক হয়ে যায়না, এটা ভাবাটাও বোকামী। তবে হিজাবকে যদি আপনি ইসলাম আর ইসলামের সংস্কৃতি মনে করেন তো সেটাও আপনার নির্বুদ্ধিতা। লেখিকা খুব সুন্দরভাবেই লেখায় বলেছেন হিজাবের ব্যাপকতা ২০১১ এর পর থেকে দেখা যাচ্ছে। তাহলে এতদিন কি আমাদের সমাজের নারীরা পর্দা সম্পর্কে অঞ্জ ছিলেন? ২০১১ এর পর তারা জানতে পারলেন যে সঠিকভাবে তারা ইসলামের সংস্কৃতি(আপনার ভাষায়) পালন করেনি?

আজ হিজাব পরেছে বলে এটা বিদেশি সংস্কৃতি হয়ে গেল, আজ যদি ওরা বিকিনি পরে তবে নিশ্চয় খুশিতে গদগদ হয়ে বলতেন দেশ আধুনিক হচ্ছে।
আসলে তোমার কষ্টের কারণটা বিদেশি সংস্কৃতি নয়, তোমার কষ্টের কারন ইসলাম, ইসলামি সংস্কৃতি।
ফাজলামোরর জায়গা পাওনা।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মধ্যে ইসলাম বিরোধী কিছু আছে বলে আমি জানিনা, কেউ বললেও সেটা আমি বিশ্বাস করিনা। তবুও যদি কেউ বলে ইসলাম বিরোধী কোন উপাদান মুক্তিযুদ্ধে ছিল তবে সে চেতনারভমুখে আমি থুথু দিই।

মাসখানেক আগে দেশে গিয়েছিলাম। স্ত্রীর সাথে শপিং এ থাকা অবস্থায় হঠাত দেখি চারদিকে হিজাব আর হিজাব যেটা চোখে প্রচন্ড লাগে। একসময় চিন্তা করলাম আচ্ছা গুনে দেখি কতজন হিজাব ছাড়া দেখা যায়। বেশ অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম হিজাবহীনের সংখ্যা শতকরা ১০ ভাগও হবে না। তার মানে এরা এখন মাইনরিটি। ভাঁজ করা সে কাপড়ের মাথার দিকে, গলায় রয়েছে গহনাদি। তার সাথে কড়া লিপস্টিক। কোনভাবেই পুরো ব্যাপারটাকে ধর্মীয় ব্যাখ্যায় আনা গেল না। তার মানে বিষয়টা ধর্ম আর ফ্যাশনের মাঝামাঝি একটা জগাখিচুড়ি। স্ত্রীকে ব্যপারটা বলতেই সে বলল, বিউটি পার্লারে এখন নাকি এই হিজাবেরই বিভিন্ন রকমের প্যাকেজ আছে। ধর্ম বা ফ্যাশন যে নামেই ওটা মাথায় চড়াক না কেন, জাতির একটা বড় অংশ যে গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে দিনকে দিন ধ্রুততার সাথে আইডেন্টিটি হারিয়ে ফেলছে তা দেখে ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব বেশী আর আশা করতে পারি না।

হিজাবের এই যথেচ্ছ রং বেরং ব্যবহার আমার ও বিরক্ত লাগে , কিছু তো রীতিমত উদ্ভট লাগে । কিন্তু সংখ্যা গরিষ্ঠ মেয়েরা যদি এই পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করে , আইনত ও সামাজিক ভাবে কোন সমস্যা না হয় তাহলে আসলে পরচর্চা আর দীর্ঘশ্বাস ছাড়া আর কিবা করার আছে ।

খুব ই অগভীর চিন্তার অন্তঃসারশুন্য একটা লেখা । লেখিকা নিজে কি ২৪*৭ দিন সবসময় একপেচে শাড়ী পরেন যেটা আমাদের আবহমান বাঙালী সংস্কৃতির পোশাক ? আপনার বাসার ছেলেরা কি শার্ট , প্যন্ট বাদ দিয়ে ( যেহেতু পাশ্চাত্যের পোশাক যা ব্রিটিশ আমলে এদেশের সংস্কৃতিতে মিশে যায়) লুঙ্গি পড়ে অফিসে যাচ্ছে ? শাড়ি ও কিন্তু মাত্র ১০০/১৫০ বছর আগে সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী বম্বেতে দেখে এসে বাংলায় ঠাকুর বাড়িতে প্রথম চালু করেন । সালোয়ার কামিগ আসে আর ও অনেক পড়ে । এরপর আসে শার্ট , প্যন্ট , স্কারট , টপ্স। এখন এগুলো আমাদের সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে বা যাচ্ছে , বরং পর্দা শালীনতার প্রতীক হিসাবে বিভিন্ন রুপে আবহমান কাল থেকেই ছিল । ণীচের পিনাকীর লেখাটি পড়ুন.

পর্দা প্রথা কি আরবীয় সংস্কৃতি এবং শুধু মুসলিম ঐতিহ্য? নাকি এটি ভারতীয় এবং হিন্দু ও বৌদ্ধ ঐতিহ্যও বটে?
খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতকেই সম্রাট অশোকের শিলালিপিতে “অবরোধবাসিনি” ও “অসুর্যম্পশ্যা” শব্দদুটি পাওয়া যায়। রামায়ণেও অবরোধের চিহ্ন খুজে পাওয়া যায়। সীতা রামের সাথে বনবাসে যাওয়ার সময় বিলাপ করে বলে যে, যার মুখ কেউ কখনো দেখেনি তিনি আজ পায়ে হেঁটে বনে যাচ্ছেন। জাতকের কয়েকটি গল্পে আছে রাজমহিষীরা কাপড় ঢাকা চতুর্দোলায় চড়ে রাজপথে বার হয়েছেন। প্রাচীন ভারতে অবগুণ্ঠন ও পর্দা ছিল যৌন শুচিতার লক্ষণ। সংস্কৃত নাটক “মৃচ্ছকটিক” এ গণিকা বসন্তসেনা যখন কুলবধুর মর্য্যাদা পায় তখন তাঁর মুখ ঢাকতে হয় ঘোমটায়। “ললিতবিস্তারে” বুদ্ধের বাগদত্তা প্রতিবাদি হয়ে বলেন, স্বামীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকার জন্য আমার অবগুণ্ঠনের প্রয়োজন নেই। তার অর্থ নারীর অবগুণ্ঠন স্বামীর প্রতি বিশ্বস্ততার এবং যৌন শুচিতার লক্ষণ হিসেবে সেই সময় বিবেচিত হতো।
ভ্রান্তভাবেই মনে করা হয় পর্দা প্রথা ভারতবর্ষে এনেছে মুসলিমরা। এই ভুল বরেণ্য চলচিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ও করেছেন। তাঁর ছবি ঘরে বাইরেতে, ভিক্টর ব্যানার্জির একটা সংলাপ ছিল এইরকম, হিন্দু নারীরা তো আগে এমন রক্ষণশীল ছিল না, সম্ভবত ইসলামের প্রভাবে তাঁরা অন্তঃপুর বাসিনী হয়েছে।
পর্দা, ভালো কি মন্দ সেটা ভিন্ন আলোচনা, পর্দা করা উচিৎ নাকি অনুচিত সেটাও আরেক আলোচনা। শুধু এটাই বলতে চেয়েছি, পর্দার ঐতিহ্য একচেটিয়াভাবে মুসলমানদের নয়। ঠিক একইভাবে পর্দা করা প্রতিক্রিয়াশীল চর্চা নয়; ত্যাগ করাও প্রগতির লক্ষণ নয়।
পর্দা আছে কি নেই, সেটা দিয়ে যারা প্রগতি মাপে, তাদের বুদ্ধির দৌড় নিয়ে আমার এর মধ্যেই ঢের শিক্ষা হয়েছে।

তবে হিজাবের এই যথেচ্ছ ব্যবহার আমার ও বিরক্ত লাগে । কিন্তু সংখ্যা গরিষ্ঠ মেয়েরা যদি এই পোশাকে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করে , আইনত ও সামাজিক ভাবে কোন সমস্যা না হয় তাহলে আসলে পরচর্চা ছাড়া আর কিবা ক্রার আছে ।

সমস্যাটা কিন্তু পর্দা করা বা না করার ব্যাপার না। সমস্যাটা হচ্ছে হিজাবকে ধর্মীয় পোশাক হিসেবে পরিচিত করে তোলার ঘৃণ্য প্রয়াসটা। কে হিজাব পড়বে আর কে বিকিনি পড়বে সেটা তাদের একান্ত বিষয়। কিন্তু বিকিনি পড়লে সে নষ্টা মেয়ে আর হিজাব পড়লে সে সতী মেয়ে এভাবে যে কনসেপ্ট গড়ে ওঠে সেটাই বিপজ্জনক।

আপু নিরপেক্ষতা বুঝি, অন্যের পছন্দের উপর হস্তক্ষেপ করা।স্বাধীনতা বুঝি বিকিনি পড়ে ফ্যাশন শো করা।আর স্বাধীনতাকে আর কোথায় কোথায় ব্যবহার করবেন।

There are many other dresses women are wearing now- a-days which is a part of latest fashion such as- jeans, jegings,leggings, t-shirts, fotua, kurti, Salwar, kamij, lehenga,skirts, and and nany more western cut dresses which is not our traditional dress. Even at marriage ceremony now brides are not choosing traditional sarees rather they are attracted by lehenga which dresses are may be originated from India or Pakistan. Changes always welcome in fashion. What is your problem with this small piece of cloth which is even worn with sarees or salwar kamij? Broaden your outlook..and get well soon.

কোনো আন্দোলনের ব্যাপার তখনই আসে যখন মানুষের কোনো অধিকার খন্ডিত হয়। কোন পোশাক (নিজস্ব সংস্কৃতি / ঐতিহ্য /ধর্মীয়) নিজের রুচি বা পছন্দ মত পরা মানুষের অধিকার। তা সে হিজাব হোক বা শাড়ি বা বিকিনি। এখন ব্যাক্তিস্বাধিনতা / বাকস্বাধিনতা মানুষ অনেক বেশি সচেতন, তাই আন্দোলনের ক্যাটেগরিও বেড়েছে। বাংলাদেশের স্বাধিনতা আন্দলনে আবালবৃদ্ধ বণিতা সকলের অংশগ্রহন এবং ত্যাগ রয়েছে। স্বাধিনতা আন্দোলন আমাদের অস্তিত্ত্বের সংগ্রাম ছিলো। লেখিকা ঠিক কিসের সাথে কিসের তুলনা করবেন –সেটি মনে হয় খেই হারিয়ে ফেলেছেন। আমি খেয়াল করলাম, সমাজের এক শ্রেণীর লোক আছে (ধার্মিক নামধারী) যারা অনেক কিছুর জন্য মেয়েদের পোশাককে দায়ী করেন। আজকাল আবার অন্য মেরুর লোকেরা (নিজেদের নিরপেক্ষ পরিচয়দানকারী) এই লোকদের সাথে টেক্কা দিতে বিশেষ কিছু পোশাক নিয়ে কটাক্ষ কিংবা বিদ্বেষ পোষণ করেন এবং ফলাও করে বলেও থাকেন। সেযুগে বোরখা পরা মেয়েরা ঘর থেকে বেরুত না, এখন সবাই বের হয়। অফিস থেকে শুরু করে ঘরের বাজারও মেয়েরাই করে। আর এখন জিনস, স্যুট, স্লিভলেস, আনারকলি অনেক কিছুই মেয়েরা পড়ছে, অনেক কিছুই এখন ফ্যাশান চলছে যেগুলো একসময় দেখাই যেত না। হিজাবও তেমনি- ধর্মীয় কিংবা সাংস্কৃতিক ব্যাপারে তাহলে শুধু ‘হিজাব’ নামটি উচ্চারিত হবে কেন-সেটাও প্রশ্ন। কেউ সে শাড়ি পরুক, কিংবা হিজাব, তার ওয়াড্রোবে কয়টা কি আছে, সে বিউটি পার্লার –এ সাজলো না ব্যানার হাতে রাস্তায় আন্দোলনে নামলো-তা নিয়ে পাব্লিকলি কটাক্ষ করার অধিকার তো কারো নেই। বিশেষ বিজ্ঞ ব্যাক্তিরা মনেহয় নিরপেক্ষতার সংজ্ঞা নিজেরাই নির্ধারন করে নিয়েছেন। এতদিন তো জেনে এসেছি অন্যের রুচি কিংবা ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রতি সহনশীলতাকে নিরপেক্ষতা বলে।
‘পরচর্চা’ at its best

@SABRINA আপনি বেশ বলেছেন । হিজাবকে ফ্যাশন হিসেবে কেউ যদি ব্যবহার করাকে কেউ যদি অশনি সঙ্কেত হিসেবে সেটা নিয়ে রাতের ঘুম হারাম করে ফেলে, তাহলে মৌলবাদী বলে যাদেরকে চিহ্নিত করেছে তাদের সাথে এনাদের তফাতটা নিয়ে কনফিউশনে পড়ে গেলাম । সিরিয়াসলি !

চমতকার বলেছেন। আপনার বেশিরভাগ বক্তব্যের সাথে আমি একমত। তবে একটা জায়গায় এসে হিজাবের ভয়াবহতা সম্পর্কে উপলব্ধি করা যায়। অন্য সব পোশাকের মত হিজাবকে কিন্তু চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে নারীদের উপর বিশেষ করে স্বামী বা পরিবার। এর অনেকটাই ধর্মের নামে। অর্থাৎ হিজাব পড়ে পর্দা রক্ষা করার নামে তাদেরকে পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। এটাই সবচেয়ে বিপজ্জনক। হিজাবের সঠিক ব্যবহার না হয়ে অপব্যবহার হচ্ছে-লেখিকা এটাই সম্ভবত বোঝাতে চেয়েছেন

Tahole Jeans Pant pora ki amader shongskritir??? ajkal dhakar 30% meye Western Dress pore.. Ashol kotha holo meyeder Gaye Jama Keno?? Meyera jetai pore shetai apnader chokhe pore.. Ke hijab porlo, Ke western porlo eta tader bepar.. eshob faltu bishoye chokh na rekhe desher jonno kuno kaaj koren… Hijab jodi keo Fashion er jonno pore thake then Mind IT ‘ Its for FASHION” so u cant say anything against fashion… If u wanna say then u have to say against every fashion girls follow… ok? Faul kothakar