শামীমা মিতু: ক্রিকেট তারকা মুস্তাফিজের সাথে একটা মেয়ে ছবি তুলেছে, সেই ছবিটা নিউজফিডে ঘুরতে দেখলাম। ছবির সাথে মন্তব্যগুলো ছিল এমন- ‘আল্লাহ তুমি আমার ভাইটারে রক্ষা করো। মাইয়ারা এমনি… মধু দেখলেই ঝাঁপ দেয়।’ ‘আরেক রুবেল বানানোর চক্রান্ত হইতেছে…!!!’ ‘এই ভদ্র ছেলেটাকে নষ্ট করে ফেলবে’ আপা এই বাচ্চা পোলাডারে ছাইড়া দেন পিলিজ লাগে’।
মানুষের চিন্তাভাবনা দেখে রীতিমতো ঘেন্না লাগতেছে। এবং অবাক হয়ে লক্ষ্য করছি এটাই আমাদের জাতীয় চরিত্র হয়ে দাঁড়াচ্ছে! একটা মেয়ে যতই ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হোন, উচ্চ শিক্ষিত হোন, সম্মানিত হোন, তাতে কিচ্ছু আসে যায় না! ১৯ বছর বয়েসি একটা ছেলে, যে এখনও লেখাপড়ার কোনো পাটই চুকায়নি, দুটো ম্যাচ খেলে বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় সাফল্য বয়ে আনলে তার কাছে যে কোনো মেয়েই নস্যি।
বাংলাদেশ দলের কোনো খেলোয়ার যদি কোনোদিন কোনো মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে এনে ধর্ষণও করে, সে মেয়েটি যেই হোক, সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামত হবে, মেয়েটি একটা নষ্টা, ‘এমন’ কারো হাতে ধর্ষিত হওয়াও তো সৌভাগ্যের!
রুবেল গোপনে প্রেম করলো, ফ্ল্যাটে ফ্ল্যাটে ঘুরলো, এরপর বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ভেগে গেল, তখনও পর্যন্ত তার উপর অশুভ ছায়া ছিল না, হ্যাপি যখন মামলা করলো তখনই রুবেলের উপর অশুভ ছায়া পড়লো!! একজন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (!) তো বলেই ফেলেছিল, রুবেলকে দেশের দরকার, হ্যাপিকে না!
তার মানে কি এই শুধু জাতীয় দলের খেলোয়ার নয়, এদেশে জনপ্রিয়, রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজনীয়(!) কোনো ব্যক্তি যদি কখনো আপনার বোনের ওড়না ধরে টানও দেয় উপভোগ করা ছাড়া আপনার কিসসু করার থাকবে না!!!