উইমেন চ্যাপ্টার (১৭ জুন): ‘উইমেনস লিডারশিপ ফর এন্টারপ্রাইজ’- এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সোমবার থেকে ঢাকায় শুরু হলো দশম কমনওয়েলথ বিষয়ক মন্ত্রীদের সম্মেলন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এই প্রতিপাদ্য অনুযায়ী সম্মেলনে কিছু অগ্রাধিকার নির্ধারণ করা হবে এবং আগামী তিন বছরে তার বাস্তবায়ন করা হবে।
বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন দশম কমনওয়েলথ নারী বিষয়ক মন্ত্রীদের সম্মেলন। এতে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি।
মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তারিক-উল ইসলাম, স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মণি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
তিনদিনব্যাপি সম্মেলনে কমনওয়েলথভুক্ত ৫৪টি দেশের মধ্যে ৩০টি দেশ অংশ নিচ্ছে। ১৫ জন মন্ত্রী এবং যেসব দেশে নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী নেই সেসব দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে অংশ নিচ্ছেন। ১৯৮৫ সাল থেকে প্রতি তিন বছর পরপর বিভিন্ন দেশে এ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
এদিকে, সোমবার সকালে সম্মেলনের উদ্দেশ্য এবং ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পা জানানোর উদ্দেশ্যে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েট (সচিবালয়) এবং বাংলাদেশের তথ্য অধিদপ্তর।
এতে বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, কমনওয়েলথের সেক্রেটারি জেনারেল কমলেশ শর্মা।
কমলেশ শর্মা বলেন, জাতিসংঘের সহস্রাব্দের উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় (এমডিজি) নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টিকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। ২০১৫ সালের পরে এমডিজি’র নতুন উন্নয়ন কর্মকৌশলে এ বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্যও এ সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কমলেশ শর্মা বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়ণ বিশেষ করে রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ, দারিদ্র্য বিমোচন, শিক্ষা, মাতৃমৃত্যু কমানোসহ বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন।
সংবাদ সম্মেলনে কমনওয়েলথ সচিবালয়ের (জেন্ডার বিভাগ) স্যোশাল ডেভেলপমেন্ট উপদেষ্টা মীনা শীভদাস, বাংলাদেশের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নারী নির্যাতন প্রতিরোধকল্পে মাল্টিসেক্টরাল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আবুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে রোববার নগরীর সিরডাপ মিলনায়তনে ব্র্যাক এবং কমনওয়েলথ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে পৃথক আরেকটি সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত তিন দিন কমনওয়েলথভুক্ত ১৭টি দেশের প্রায় শতাধিক বেসরকারি প্রতিনিধির সমন্বয়ে পার্টনার ফোরামের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা থেকে নারী মন্ত্রীদের সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য একটি সুপারিশমালা তৈরি করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্র্যাকের পরিচালক (জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম) শিপা হাফিজা বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের বিকাশের ক্ষেত্রে বিরাজমান সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে। এ সুপারিশগুলো যাতে সম্মেলনের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত করা যায় সে বিষয়ে লবি চালানো হবে। সম্মেলনের এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত হলেই বিভিন্ন দেশের সরকার এসব সুপারিশ আমলে নিয়ে বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেবে।
পার্টনার ফোরামের সুপারিশে এমডিজি পরবর্তী উন্নয়ন কর্মকৌশলে নারী ও মেয়েদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়টি গুরুত্ব দিতে বলেছে। নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নারীবান্ধব নীতিমালা তৈরি, নারীর প্রতি সব ধরনের নির্যাতনের অবসান ঘটানো এবং প্রতিবন্ধী নারীদের চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়ার জন্য কমনওয়েলভুক্ত সরকারগুলোর কাছে আহ্বান জানানো হয়েছে।