উইমেন চ্যাপ্টার: পহেলা বৈশাখে বর্ষবরণের উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারীর ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনায় প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি নারী নিরাপত্তা জোট গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈশাখী উৎসব ১৪২২ এ যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদকে জোরালো প্রতিরোধে রূপান্তর করার বিষয়ে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সভাটি বিভিন্ন বেসরকারি নারী সংগঠন, মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে আহ্বান করেন মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন বেসরকারি নারী সংগঠনের কর্মী-সদস্যরা ছাড়াও শিক্ষক, সাংবাদিক, শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিভিন্নজনের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য হাজেরা সুলতানা, নিজেরা করি’র নির্বাহী পরিচালক খুশী কবির. নারী প্রগতি সংঘের নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর, দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত ও পাক্ষিক অনন্যা সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, সাহিত্যিক নূরজাহান বোস, সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির জিয়া উদ্দিন তারেক আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গীতি আরা নাসরিন, ট্রেড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদ ইসলাম খান, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির অ্যাডভোকেট রাশিদা বেগম, মানবাধিকার কর্মী নাহিদ সুলতানা, ফওজিয়া খোন্দকার ইভা, ফারহানা হাফিজ, সাংবাদিক সুপ্রীতি ধর, ও ছাত্র ইউনিয়নের লিটন নন্দীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বৃন্দ।
বক্তারা আন্দোলনকে দীর্ঘমেয়াদি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন। পাশাপাশি এই ঘটনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিশ্চুপ থাকায় ক্ষোভও প্রকাশ করেন অনেকে। তারা বলেন, সরকার এই ঘটনাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে, উপরন্তু ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।
বিভিন্ন সুপারিশের মধ্যে রয়েছে, নানা সংগঠনের পক্ষ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে ছোট ছোট আন্দোলন অব্যাহত থাকার পাশাপাশি সবগুলো সংগঠন মিলে বড় সমাবেশের আয়োজন করা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ঘেরাও করে মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীকে এই ঘটনা সংঘটনের কথা স্বীকার না করা পর্যন্ত অবস্থান নেয়া, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া, বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায়, রাস্তাঘাটে নারীদের উপস্থিতি বাড়ানো, ঢাকার বাইরে যেসব সংগঠন এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে তাদের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম চালানো ইত্যাদি।
তাছাড়া বক্তারা বিভিন্ন নির্যাতন-নিপীড়ন সম্পর্কে এখন আর মুখ বন্ধ করে থাকা নয়, বরং এ নিয়ে আরও বেশি আলোচনা, লেখালেখির ওপর জোরারোপ করেন।