তামান্না কদর: যতোদিন মেয়েরা বিয়ের পর অসমচুক্তির পুরুষের বাড়িতে যাবে এবং অবস্থান করবে ততোদিন নারী নির্যাতন থাকবেই। পরের বাড়িতে থেকে নির্যাতিত না হয়ে ক্ষমতায়িত হবে এমন বোকা ভাবনা নারী এবং নারীসমাজ চিন্তা করে কি করে!
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, সভা-সেমিনারে কি অসাধারণ বোকা বোকা বক্তব্য দেয় ওরা। নারী নির্যাতনের কারণে না গিয়ে, শেকড়ে না গিয়ে ডালপালা ছাটায় ব্যস্ত ওরা। শেকড় ধরে টান দিন। নারী নির্যাতনের বিষবৃক্ষ উপড়ে আসুক। নারীর একান্ত নিজের মালিকানায় একটি ঘর না হলেই নয়। নারী নিজের মালিকানা নিজে দাবী করতে সচেষ্ট হোক।
সমাজ ভাঙ্গার, সংসার ভাঙ্গার শক্তিতে বলীয়ান হোক নারী কেননা এ সমাজ, এ সংসার নারীর নয়, শুধুই পুরুষের, পুরুষতন্ত্রের। পরের বাড়িতে থেকে, পরেরটা খেয়ে নিজের মতো করে চলা কি আদৌ সম্ভব? গৃহবধু তথা গৃহবুয়ারা তাই-ই মনে মনে করে যে, সম্ভব।
কি করে? ‘এইতো একটু মার্কেট, একটু মেকআপ, কিছু গয়না, ব্যস এই তো স্বাধীনতা, কোন রংয়ের লিপষ্টিক লাগাবে এ নিয়ে পুরুষটি মাথা না ঘামালেই তো স্বাধীনতা।’ অনেক নারীসংগঠনের মধ্যে ‘বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ’ একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠন। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সংগঠনের সভ্যরা যখন বলেন বা দাবি করেন-মোহাম্মদ তার বিদায় হজ্বের ভাষণে নারীপুরুষের সমানাধিকার দিয়ে গেছেন (নারী উন্নয়ন সংক্রান্ত মিটিং এ বসে)’ তখন এদের কি করতে ইচ্ছে করে! ।
মুসলিমদের জন্যে হাদিস-কুরান দুটোই প্রয়োজন। কোরানের কোথাও এমনকি হাদিসের কোথাও ‘নারীপুরুষ সমান মর্যাদার অধিকারী’ একথা পাওয়া যায়নি। উল্লেখ্য হাদিস- ‘পুরুষের পক্ষে নারী অপেক্ষা আমি আমার পরে আর কিছু রাখিয়া যাইতেছি না।’ নারী আন্দোলনকর্মীদের এমনতরো ধারণায় হতাশা হয় না, ক্ষোভ হয়, সবচেয়ে বেশী হয় আতঙ্ক। ভুল বিশ্বাস আর ভুল ব্যাখ্যায় নারীবাদ, নারীর আন্দোলনকে এরা কোথায় নিয়ে যাচ্ছে! এরা এতো ভুল জানে কি করে!
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভ্যগণ, রাস্তায় মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে গলাধ্বনি না করে বাড়িতে বসে নারীর ইতিহাস ও জীবন সম্পর্কিত বই পড়ুন।
নারী আন্দোলনকর্মীরা আসলে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা নয়, স্ত্রীর অধিকার বা স্ত্রীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় ব্যস্ত। তারা এখন দেনমোহর আর ভরনপোষণ আদায়ে এতোই ব্যস্ত যে নিকাহনামা ছক এবং সন্তানের অভিভাবকত্ব নিয়ে কমই ভাবার সুযোগ পান। দেশে আসলেই ভদ্রমহিলা উৎপন্ন হচ্ছে, মানুষ হয়ে উঠছে না।