নারীর পক্ষে যাওয়া যখন বিপদজনক

Canada Tribalsনাসরীন সিরাজ: যদিও এই নোট লিখছি বাংলা নিউজ ২৪ . কম এর “ওবামার গার্ড অব অনার: প্রথা ভাঙলেন প্রথম নারী কমান্ডার পূজা” শিরোনামে খবরটি নিউজ ফিডে শেয়ার হতে দেখে বিরক্ত হয়ে কিন্তু এই বিরক্তির আছে অতীত ইতিহাস।

 প্রায়ই ফেসবুকের নিউজ ফিডে দেখি নারীদের সফলতা হিসেবে চিহ্ণিত করে, আহলাদিত হয়ে কিছু খবরা খবর শেয়ার হচ্ছে।

যেমন, ১. কোকাকোলার সিইও একজন নারী – দে হাত তালি! হ্যালো বেকুবের দল! কোকাকোলা! কিছু কি মনে পড়ছে? কোম্পানীটি পানিকে বানিজ্যিক পণ্যে পরিণত করছে, দখল করেছে নদীর মত কমন প্রপার্টিকে, বিজ্ঞাপনের মত মিথ্যাচারে আবিষ্ট করে আমাদের সন্তানদের গেলাচ্ছে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য। এবার তাদের নেতা নারী হোক, কালো হোক, সমকামী হোক, হিজড়া হোক, আদিবাসী হোক, চাই কি স্টিফেন হকিং হোক, সেটাতে কি খুশীতে ডগমগ হওয়া যায়? আপনি কার পেছনে দাঁড়াচ্ছেন? কারণের? না প্রতীকের?

২. বাংলাদেশের যুদ্ধ বিমান চালক হিসেবে নারী নিয়োগ/ শান্তি মিশনে নারী সৈন্য রিক্রুট- ওয়েল ডান! আপনি কি সত্যিই আপনার বোধ বুদ্ধি হারিয়ে ফেললেন? ধনী দেশগুলোর যুদ্ধ লোলুপ রাষ্ট্রপ্রধানরা বোমা মেরে জনপদের পর জনপদ তামা বানিয়ে দিচ্ছে, খুন করছে অগুনতি নিরীহ মানুষ, আর সেই মৃত্যু উৎসবে নারীদের পদ পাওয়ায় আপনি নারীর ক্ষমতায়ন দেখতে পেলেন?

“নারীরা সকল পেশায় সমতার সাথে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম” – শত বছরের এই নারী আন্দোলনের অর্থ এ্রই নয় যে কোন নারী এই পৃথিবীর জীবন বিনাশি প্রকল্পের সাথে যুক্ত হলে কান্ডজ্ঞান হারিয়ে তাকে বাহবা দিতে হবে। লিঙ্গীয় বৈষম্যের রাজনীতি অনুধাবনে যদি বিন্দুমাত্র মস্তিষ্ক খাটাই তবে এই পৃথিবীর জীবনের প্রতি হুমকিমূলক তাবৎ বৈষম্যের রাজনীতি বোঝাবুঝির চেষ্টা থেকে বাদ দেয়ার কোন অবকাশ নেই। অন্যথা হলে নারীবাদীদের প্রতিপক্ষদের কাতারেই দাড়াতে হবে নিজের অগচোরে, যারা মনে করে নারীর শুধু যোনী আছে, মস্তিষ্ক নেই।

ওবামাকে গার্ড অব অনার দিয়ে কোন প্রথা ভাঙেননি পূজা। প্রথা ভাঙতো যদি তিনি নিজের শৃংখল থেকে বের হয়ে উচ্চারণ করতে পারতেন -“ওবামা আপনি সম্মান পাবার যোগ্য নন কারণ আপনি সারা দুনিয়াটাকে ত্রাসের রাজত্ব হিসেবে বিরাজমান রাখতে গোলামি করে যাচ্ছেন, খুন করছেন নারীদের নাড়ি ছেঁড়া ধনদের।”

 

শেয়ার করুন:
Copy Protected by Chetan's WP-Copyprotect.