রিয়াজুল হক: হ্যাপি ও রুবেল এখন সংবাদ। সংবাদের উপাদান ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ। সেই অভিযোগ হ্যাপি এনেছে রুবেলে বিরুদ্ধে। বিষয়টি এখন আদালতে। আদালতই চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছাবে। এ অভিযোগ সত্য নাকি মিথ্যা। এই অভিযোগের পর পুলিশ রুবেলকে গ্রেফতার করেছে। রুবেল কে? একজন ক্রিকেটার, জাতীয় দলে খেলেন। হ্যাপি কে? একজন শিল্পী, চলচ্চিত্রে ও মিডিয়ায় কাজ করেন।
রুবেলের গ্রেফতারের পর সংবাদ শিরোনাম-আগামী বিশ্বকাপ ক্রিকেটে রুবেলের বাংলাদেশ জাতীয় দলে না খেলার আশঙ্কা। রুবেলকে নিয়ে সবাই চিন্তিত। কিন্তু কোথায়ও দেখা গেল না-ওই ঘটনাটি হ্যাপির শিল্পী জীবনে কী অাশঙ্কা তৈরি করেছে, সেই বিষয়ে সংবাদ। হ্যাপিকে নিয়ে কেউ চিন্তিত নয়। অনেক বলেন, নিপীড়নের শিকার হওয়ার পর নারীদের নীরাবতা ভাঙ্গতে হবে। হ্যাপি ভেঙ্গেছেন। তারপর, সেই অনেকে কোথায়?
হ্যাপি এখন হিজাব পড়ছেন। কারণটা অনুমেয়। এখন, সমাজে তাকে পরীক্ষা দিতে হচ্ছে যে, তিনি একজন ‘ভাল নারী’। তিনি একজন ’খারাপ নারী’ নন। কারণ, ’খারাপ নারীরা ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হন’।
এদিকে রুবেলের পক্ষে মিছিল-সভা-অবরোধ চলছে। মিডিয়াতে তাও ফলাও করে প্রচার হচ্ছে। রুবেলের পক্ষে আন্দোলনকারীদের সাক্ষাৎকার প্রদর্শন হচ্ছে। কারণ, আমরা যা শুনতে চাই, আমরা যা দেখতে চাই, মিডিয়া নাকি আমাদের তাই দেখায়, তাই শোনায়। রুবেল যে আমাদের হিরো! জাতীর বীরত্বের প্রতীক! তার বিরুদ্ধে কোন নারী অভিযোগ আনলো, সেটি গৌণ। বিশ্বকাপে যে তাকে চাই! সে আকাঙ্ক্ষার প্রতিচ্ছবি মিডিয়াতে আছে।
দিন শেষে হ্যাপি সমাজের কাছে একজন শিল্পী নয়, শুধুই নারী। রক্তমাংশের একটি শরীর-আমাদের যৌনভোগের উপযোগিতা আছে যার মধ্যে। আর রুবেল একজন ক্রিকেটার। একজন দ্রুতগতির বোলার। তিনি একজন পুরুষ। আমাদের গর্ব ও সম্মান ভোগের উপযোগিতা যার শৈলীতে, নিপূণতায়, ক্ষিপ্রতায় এবং পেশিতে। ভুলে যাই কী করে, পুরুষতন্ত্রের এই নির্মাণ ও পুননির্মাণের অন্যতম একটি এজেন্ট হল মিডিয়া।